ঢাকা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

লালমনিরহাটে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ১২

লালমনিরহাটে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ১২

লালমনিরহাটে বাস মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সাংবাদিক, এক পুলিশ সদস্যসহ শ্রমিকদের দুই গ্রুপের অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার দুপুর ১২ টার দিকে জেলার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

শ্রমিকরা জানায়, লালমনিরহাট জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব নিয়ে দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষ সংগঠনের পুরনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার(২৪৯৩) বহাল রাখার দাবি এবং বহিরাগত শ্রমিক ও দ্বৈত শ্রমিক দ্বারা প্রচলিত শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি ওমর ফারুক বাবলু। অপর পক্ষ শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রাখে। যার নেতৃত্ব দেয় মাহফুজার ও বকুল ড্রাইভারগংরা।

শ্রমিক নেতা বাবলু জানায়, ৫ আগষ্টে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকেই মাহফুজার, বকুলসহ বেশ কিছু শ্রমিক আওয়ামী দোসরদের সাথে নিয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে দ্বৈত শ্রমিক দ্বারা, বহিরাগত শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চালায়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার সাধারণ নিবন্ধিত শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী একটি মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলটি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মানববন্ধনের জন্য পৌঁছালে বাস টার্মিনালে আগে থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী অবস্থান নিয়ে থাকা মাহফুজার, বজুল ড্রাইভার গংরা আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করে সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায় বিচার পেতে শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আহবান করে বক্তব্য দেন তিনি।

তবে ইটপাটকেল ছুড়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে অপর পক্ষ। তাদের দাবি বাবলুর নেতৃত্ব দেওয়া মিছিল থেকেই বাস টার্মিনালে থাকা শ্রমিকদের উপর ঢিল ছোড়া হয়। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বাসটার্মিনালে থাকা শ্রমিকরা নতুন করে শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছিলো বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক এসআর শরিফুল ইসলাম রতন বলেন, শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ভিডিও ধারন করার সময় আমাকে ও ডেইলি বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্নার উপর হামলা চালায় একটি পক্ষ। সাংবাদিকের উপর হামলা করার বিষয়টি নিয়ে ভিডিও দেখে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলমান বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শ্রমিকদের একটি গ্রুপ প্রতিবাদ মিছিল ও একটি পক্ষ সমাবেশ করছিলো। উভয় পক্ষই বাসটার্মিনাল এলাকায় মুখোমুখি হলে প্রথমে ইটপাটকেল ছুড়ার ঘটনা ও পরে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার হয়। এতে একজন পুলিশসদস্য, সাংবাদিকসহ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাটে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ১২
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত