শয্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল এলাকার সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার গ্রামঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় স্বয়ংক্রিয় ২৭৩টি অটো-রাইসমিল। এসব মিলের বর্জ্যে ও ধোঁয়ায় ফসলি জমিসহ গাছাপালা বিনষ্ট হচ্ছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কাজ হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উক্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনুমোদিত ৮৬ টি অটো-রাইস মিল রয়েছে। এরমধ্যে চান্দাইকোনা ইউনিয়নেই রয়েছে ৮৩টি এবং মালিকেরা নিজ উদ্যোগে এ মিল স্থাপনের পর খাদ্য অধিদপ্তরে আবেদন করেই উৎপাদন কাজ শুরু করে থাকেন। এরমধ্যে অধিকাংশ মিল পরিবেশের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে স্থাপন করা হয়েছে। এতে মিলের গরম পানি, ছাই, ধোঁয়া ও বর্জ্যে ফসলি জমিসহ দূষণ হচ্ছে এ অঞ্চলের বিভিন্ন নদী নালা। অধিকাংশ মিলের চারপাশে কমবেশি কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন এবং চুল্লি দিয়ে ধোঁয়ার সঙ্গে তুষের ছাই চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে। শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতাও নেই। খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন থাকলেও মিলের নেই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা বলেন, কয়েক বছর ধরে ঘনবসতি ও ফসলি জমির মধ্যে এসব মিল গড়ে উঠেছে। এতে অনেক স্থানে গরম পানি, বর্জ্য, ধোঁয়া ও ছাই উড়ে জনজীবন অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এসব কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানেও ব্যাহত হয়। এতে বিভিন্ন দপ্তরে সম্প্রতি অভিযোগ করেও কাজ হয়নি।
মিল মালিকরা বলছেন, অটো রাইসমিল চালানো হলে কিছু ক্ষতি হবে এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে জনস্বার্থে উপকারও হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুর রউফ জানান, অটো রাইস মিলের ধোঁয়া ও ছাই পরিবেশ ও ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষতির উপক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ ও খাদ্য অধিদপ্তরকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর বলেন, তিন-চারটি অটো রাইস মিলের ছাড়পত্র আছে এবং কয়েক টার আবেদন করা রয়েছে। তবে যারা ছাড়পত্র নিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই নবায়ন করছেন না। তবে মিল প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব রাইস মিলের বর্জ্যর বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ফসলি জমি ও নদী দূষণ করে কোনো প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। এসব মিল মালিকদের সতর্ক করা হবে। সতর্ক না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।