যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে সাবু হোসেন (৩৫), সাকিব হোসেন (২২) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬) নামে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে উপজেলার পাঁচ ভুলাট ও পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদীর কাছ থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে শার্শা থানা ও বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। দুপুরে হাত বাধা অবস্থায় সাকিব হোসেনের লাশ ইছামতি নদী থেকে উদ্ধার করে শার্শা থানা পুলিশ।
সাকিবের দুই হাত পিঠ মুড়া দিয়ে বাধা ছিল। পুলিশ বলছে নিহতদের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত, সাবু হোসেন বেনাপোল পোর্ট থানাধীন দিঘীর পাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে ও জাহাঙ্গীর একই থানার কাগজপুর গ্রামের মৃত, ইউনুচ আলী মোড়লের ছেলে।
অপরদিকে বিকালে উদ্ধার হওয়া সাকিবুল হোসেন বেনাপোল দিঘীরপাড় এলাকার জামিল ঢালির বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সকাল ০৭.৪০ মিনিটে খুলনা ব্যাটালিয়ন (২১বিজিবি) এর পাঁচ ভুলাট বিওপি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মেইন পিলার ১৭/৭এস এর ১০২আর পিলার হতে আনুমানিক ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত শূন্য লাইন হতে ৩০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর পাড়ে ভান্ডারীর মোড় নামক স্থানে একটি লাশ উলঙ্গ অবস্থায় বাংলাদেশের সীমান্তে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
ঘটনাস্থলে শার্শা থানার এস,আই আওয়াল হোসেন ও এস, আই কামরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপস্থিত হয়ে বিজিবির উপস্থিতিতে লাশ নদী তীর থেকে উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারন নির্ণয় এর জন্য ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্য যশোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। লাশের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের পরিবার থেকে জানিয়েছে, তবে এলাকাবাসী জানায় ভারত সীমান্তে গমন করেন এবং ধারণা করা যাইতেছে যে, সে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক আটক হয়ে মারধরের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসার সময়ে মৃত্যু বরণ করে।
অপারদিকে, ১৭ই ডিসেম্বর দিবাগত রাত ০১:৩০ মিনিটের দিকে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন দীঘীর পাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে সাবু হোসেন ভিকটিম নিজে আহত অবস্থায় নাসিরের আম বাগানে আসলে স্থানীয় লোকজন তার বাড়িতে ফোন করে খবর দিলে তার মা এবং বউ গিয়ে তাকে ভোর ৪টার সময় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে।পরে সাবু পানি খেতে চাইলে পানি খাওয়ার পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
এদিকে বেলা তিনটার দিকে ইছামতি নদীতে সাকিব হোসেনের মৃতদেহ ভেসে উঠলে এলাকাবাসী বিজিবি খবর দিলে শার্শা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
সাবু হোসেনের নানা জাবেদ আলি দাবি করেন, তার নাতি ট্রাকে ড্রাইভারি করে। তবে এলাকাবাসী বলছে নিহতরা সবাই চোরাচালানি। এ সংক্রান্ত কোনো বিরোধের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে ২১ বিজেপির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিজিবি মনে করে। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে কারণ জানানো যাবে।
সহকারী পুলিশ সুপার(নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিভাবে তাদের মৃত্যু হলো আমরা তদন্ত করছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে হয়তো মৃত্যুর কারণ জানাতে পারবো বলে তিনি জানান।