সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরবর্তী বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে এ শিল্প পার্কের প্লট বরাদ্দের কার্যক্রমে চলছে ধীরগতি। এ নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুকে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলে শিল্পায়নে বিশেষ ভূমিকা এবং সিরাজগঞ্জে শিল্প বিকাশের সম্ভাব্যতায় ‘শিল্প পার্ক’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সেতুর পশ্চিমপাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৭টি মৌজার প্রায় ৪’শ একর জমির ওপর শিল্প মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। ৭১৯ কোটি ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ের বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোসহ লাখো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ২০১০ সালের আগস্টের শেষে একনেক সভায় সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদিত হয়।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নদী অনুশাসনসহ প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদন হয় এবং ২০১৫ সালে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩ ও ৪ নম্বর ক্রসবার নির্মাণের পর ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে মাটি ভরাটের অনুমতি পায়। কিন্তু প্রকল্পের প্রথম সংশোধনের মেয়াদ ২০১৬ সালের মাঝামাঝি শেষ হলে ওই বছরের নভেম্বরে একনেকে দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়।
২০১৮ সালের মে মাসে ঠিকাদার নিয়োগের অনুমোদনের পর নভেম্বরে নৌবাহিনী নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ একনেকে অনুমোদন হয়। এ মেয়াদের মধ্যেই প্রকল্পের ৯০ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়। বর্তমানে এ প্রকল্প পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে এবং প্লটের বিপরীতে দর নির্ধারণের কাজ চলছে। ওই প্রকল্পের ২৭৫ একর জমিতে এ, বি ও এস (স্পেশাল) এ তিন ক্যাটাগরির ৮২৯টি প্লট ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্লটে ৫৭০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে।
শিল্পপার্কের সৌন্দর্য বাড়াতে সবুজ বৃত্তসহ একটি হ্রদ নির্মাণ হবে। এছাড়া পার্ক এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি, প্রশাসনিক জোন, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, আবাসিক কোয়ার্টার, রেস্টুরেন্ট ও মার্কেটের কাজও চলছে।
উদ্যোক্তারা বলেন, ঢাকা উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের পাশেই গড়ে ওঠা শিল্পপার্কের চারদিকে বিশেষ সুবিধার কারণে আমরা এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই। অনেকদিন ধরেই আমরা প্লট বরাদ্দ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ করছি। কিন্তু প্লট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি না দেয়ায় পিছিয়ে পড়ছি এবং শিল্পায়নে এ অঞ্চল পিছিয়ে পড়ছে।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, সিরাজগঞ্জে ইনভেস্ট করার মতো ভালো পজিশন রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এখানে শিল্পপার্ক স্থাপন হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বিসিক শিল্প পার্কের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়েজিদ সাংবাদিকদের বলেন, বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও মূল্য নির্ধারণ হয়নি। মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। এ মাসেই বোর্ড মিটিং রয়েছে। এ মিটিংয়ে মূল্য পাস হলে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। তবে পিছিয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রকল্পের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তেই চূড়ান্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন।