আনোয়ারায় সেবা সচল, কর্ণফুলীতে চেয়ারম্যান শূন্যতায় অচলাবস্থা!

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম-১৩ আসনের আওতাধীন আনোয়ারা উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে সেবা কার্যক্রম সচল থাকলেও কর্ণফুলী উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শূন্যতায় অচলাবস্থায় রয়েছে। 

কর্ণফুলীর জুলধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মৃত্যুসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, বিতর্ক ও অনুপস্থিতির কারণে পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তি বাড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার চেয়ারম্যানরা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে এখনো তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কর্ণফুলীর পাঁচটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান না থাকায় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে ইউনিয়নের রুটিন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানরা এই সিদ্ধান্তকে "আইনবিরোধী" দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর চেয়ারম্যান শূন্য হয়ে যায় পরিষদ। এছাড়া চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামলার কারণে পলাতক, শিকলবাহা ও বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা প্রশাসনের নির্দেশে দায়িত্ব থেকে বিরত। চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিতে চাইলেও প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতায় তা সম্ভব হয়নি।

কর্ণফুলী ইউএনও মাসুমা জান্নাতের একাধিক অফিস আদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনসহ পরিষদের অন্যান্য কার্যক্রমের দায়িত্ব চেয়ারম্যানদের পরিবর্তে কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানদের দাবি, এ সিদ্ধান্ত "জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪" এর পরিপন্থি।

আনোয়ারা উপজেলায় ইউএনও তাহমিনা আক্তারের নেতৃত্বে ১১টি ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে চলছে। বটতলী ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং পরৈকোড়া ও হাইলধর ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন। চেয়ারম্যানদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও এখানে সেবার কোনো ঘাটতি নেই।

বিশাল জনগোষ্ঠীর সেবা প্রদানে জনপ্রতিনিধির অভাব পরিষদের কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলছে। কর্ণফুলী উপজেলার প্যানেল চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক হলেও প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতা এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নোমান হোসেন বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যানরা আবেদন করলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তবে এর সঙ্গে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, জনপ্রতিনিধি না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সেবা পেতে নাগরিকদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, জনপ্রতিনিধিদের শূন্যতা দ্রুত সমাধান হলে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে।