কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে এখন বোরো ধান আবাদের ধুম লেগেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
তবে, ডিজেল ও সার-কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। চলতি বছর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাত লক্ষ ৮৮ হাজার মেট্রিকটন চাল। সরকার নির্ধারিত দামে যার বাজার মূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।
হাওরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ বোরো ধানের চাড়া রোপনে ব্যস্ত। আবার কেউ জমিকে চাড়া রোপনের উপযোগী করে তোলতে ব্যস্ত। কেউবা ব্যস্ত বীজতলা থেকে চাড়া উত্তোলনে। প্রতিবছর এ মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ নিয়ে এমন কর্মব্যস্তার দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে। ইতিমধ্যে হাওরের ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চাড়া রোপন শেষ। খুব দ্রুতই বাকি জমিতে রোপন শেষ হবে। তবে, সার, ডিজেল, কীটনাশকের দাম বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় সরকারিভাবে ধানের দাম বাড়ানোর দাবি কৃষকের।
মিঠামইন হাওরের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, ত্রিশ কাঠা জমি রোপন করতেছি। এখন, সারের দাম বেশি, ডিজেলের দাম বেশি। সরকার যদি কমিয়ে দিতো তাহলে পুষে যেত। ইটনা হাওরের কৃষক কামাল মিয়া বলেন, অর্ধেক জমি রোপন শেষ। এখন জিনিসের দাম বাড়তি, সে তুলনায় ধানের দাম কম। এ বছর জমিগুলো আমরা আগাম রোপন করে ফেলতেছি। আবহাওয়া ভাল, এবার আগাম বন্যায় না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
অষ্টগ্রাম হাওরের কৃষক আলতু মিয়া বলেন, এবার হাওরের পানি সময়মত নেমেছে। হালচাষ করে চাড়া রোপন করতেছি। আবহাওয়া ভাল থাকলে আশা করা যায় ফসল ভাল হবে।
হাওরাঞ্চলসহ সমস্ত জেলায় বোরো আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার কথা জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
তিনি আরও বলেন "আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। আশা করছি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে যদি বৈরী আবহাওয়া না হয়। আবহাওয়া এই মুহূর্তে অনুকুলে আছে এবং এবার হাইব্রীড ধানের চাষ বাড়ছে। আমরা চল্লিশ হাজার কৃষককে দুই কেজি করে বীজধান এবং সার বিতরণ করেছি। কৃষি উপকরণ যাতে পর্যাপ্ত হয়, কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে, সেজন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং অব্যাহব আছে। সব মিলিয়ে এবার বাম্পার ফলনের আশা হাওরে।"
চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চলে এক লক্ষ চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় লক্ষ্যমাত্রা এক লক্ষ ৬৮ হাজার এতশত হেক্টর জমিতে।