চলতি বছরের ১১ নভেম্বরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আলাউদ্দিন নগর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে ৪ কৃষি শ্রমিক নিহত হয়। এই মৃত্যুর খবরের রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার আদিতমারী উপজেলার নামুড়ি রথেরপরে এক বৃদ্ধ ও ২২ ডিসেম্বর রোববার নামুড়ি স্টেশনের পাশে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে লালমনিরহাট- বুড়িমারী রেলপথে গত ৩ মাসে কমপক্ষে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই রেলরুটে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। রেলরুটটি যেন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।
জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় বুড়িমারী স্থলবন্দরের অবস্থান। বুড়িমারীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সড়ক ও রেলরুট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটির পাশাপাশি এই রেলরুটটির গুরুত্ব অনেক। প্রায় ২৪ বার মহাসড়ক ক্রস করেছে রেললাইনটি। এছাড়া গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়কে ক্রস করেছে অর্ধশতাধিক জায়গায়। এসবের অধিকাংশ স্থানে গেটম্যান নেই।
এছাড়া রেললাইন ঘেঁষে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে জনবসতি। যার কারণে রেলপথটি হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া সামাজিক ও পারিবারিক বৈষম্য, নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় অনেকে এই রেলরুটটিকে আত্মহননের স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। এই রেলরুটে এসে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। এমনকি ট্রেন লাইনের পাশে কৃষি ও গৃহস্থালির কাজ বেড়েছে।
গত এক মাস আগে এমন কৃষি-গৃহস্থালি কাজের চার শ্রমিক এই রেলরুটে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। গত সোমবার ও রোববার বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেন নামুড়ি স্টেশন পার হওয়ার সময় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধা ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের কেউ নিহতের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার আব্দুস সালাম বলেন, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ গেটগুলোতে জনবল দেয়া হয়েছে। গ্রামীণ রেলক্রসগুলোতে এই মুহূর্তে গেটম্যান দেয়ার মতো জনবল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নেই। এই রুটের রাস্তায় জনসাধারণকে একটু সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রচার করেছে।