পাবনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ১৪৩টি ইটভাটা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে। ফলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে।
অপরদিকে এসব ইটভাটায় মাটি জোগান দিতে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। এতে ব্যাপকহারে কমছে জেলার আবাদি জমিও। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এসব ইটভাটার কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।
পাবনা জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলায় বর্তমানে ১৭৩টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে ৩০টি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে ১৪৩টি ইটভাটা। শুধু মাত্র জেলার ঈশ্বরদী উপজেলাতেই রয়েছে ৫৫টি ইটভাটা। যার বেশিরভাগ ইটভাটা কৃষি জমিতে অবস্থিত।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে ইটভাটার মাটি কাটার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়। এছাড়াও ইটভাটার মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে বিপুল অর্থের জোগান যায় সংশ্লিষ্ট সব মহলে। ফলে বারবার এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উদ্যোগ নিলেও রহস্যজনকভাবে তা থেমে যায়।
পরিবেশবিদরা বলছেন, যেভাবে ইট পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে তাতে অতি নিকটে আমাদের ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে পাবনার হেমায়েতপুর ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের ঘরবাড়ি, গাছপাড়া ও বিভিন্ন বাগানগুলো নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সের মানুষ। কৃষিজমি হারাচ্ছে উর্বরতা। ফলে খাদ্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, পাবনার উপ-পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, পাবনায় আবাদি কৃষি জমি কমছে। একটা ইটভাটার পাশে এখন আরেকটা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আবাদি কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েছি। এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি কাজ না করে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।
পরিবেশ অধিদফতর, পাবনার সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর এবিষয়ে তথ্য দিতে কিছুদিন সময় চেয়ে বলেন, আমরা কাজ করছি, জেলা প্রশাসক স্যারের সমন্বয়ে একটা পদক্ষেপ নিচ্ছি। খুব শিগগিরই একটা অ্যাকশনে যাব ইনশাআল্লাহ।
পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত অভিযান চলছে, আমাদের তো লোকবল কম, ১৮ জনের জায়গায় মাত্র ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট। তারপরও আমাদের অভিযান চলছে, জরিমানা করা হচ্ছে। অন্যান্য বিভাগ যদি একটু এগিয়ে আসতো তাহলে ভালো হতো।