শেরপুরে সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:০০ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ ছামিউল আলম সোহান, শেরপুর
আবহাওয়া আর পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এ বছর শেরপুরে বাম্পার ফলন হয়েছে সরিষা চাষে। যেদিকে তাকানো যায়, সে দিকেই যেন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। এসব সমারোহে চারিপাশে যেমন ছড়াচ্ছে মৌ মৌ সুগন্ধ, তেমনি ফুটছে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক।
জানা গেছে, ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নকলা, নালিতাবাড়ী ও শেরপুর সদরের বেশিরভাগ জমিতে এখন চাষ হচ্ছে সরিষার। প্রতিবছর অল্প কিছু সংখ্যক জমিতে চাষ হলে ও এ বছর নতুনভাবে বেশ কিছু এলাকায় সরিষার আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় দ্রুত বেড়ে উঠেছে সরিষার গাছগুলো, আর কয়দিন পরেই শুরু হবে জমি থেকে সরিষা তোলার কাজ।
শেরপুর সদরের ৬নং পাকুড়িয়া ইউনিয়নের বাদাপাড়া গ্রামের সরিষা চাষি খলিলুর রহমান খতন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে অল্প অল্প করে সরিষা চাষ শুরু করি। এ বছর বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় প্রায় ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ক্ষেতের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে গেলো বছরের তুলনায় এ বছর লাভ হবে দ্বিগুণ। একি এলাকার শাজাহান মিয়া বলেন, ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এবার ভালো ফলন হয়েছে। গতবছর প্রতি মণ সরিষা ৩ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি করেছি। এ বছর বাজারে সরিষার ভালো চাহিদা রয়েছে। আশা করছি, এ বছর ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে।
শ্রীবরদী উপজেলার তাঁতিহাটি এলাকার সরিষা চাষি ক্যসাউ মারমা বলেন, প্রতিবছর সরিষার চাষ করি। এতে জমির যেমন উর্বরতা বাড়ে, তেমনি উৎপাদিত সরিষা দিয়ে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করে আসছি। এ বছর সরিষা থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য ৪-৫টা বক্সও বসিয়েছি।
এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, সারা দেশের তুলনায় শেরপুর জেলা সমতল ভূমির পরিমাণ বেশি। এর কারণে এখানে একি জমিতে বারবার চাষাবাদ করতে হয়। এতে জমির উর্বরতা কমে যায়। সেকারণে বার বার আবাদ করা জমির উর্বরতা বাড়াতে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে বিনামূল্যে বীজ সহ নানা প্রকার পরামর্শ প্রদান করে আসছে।
অপরদিকে অভিজ্ঞজনেরা বলছে, এই চাষে জেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা আরো বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকরা ন্যায্য দাম পেলে একদিকে যেমন ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে। অপরদিকে আর্থিকভাবে সচ্ছল হবে জেলার কৃষকরা। এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় কৃষকদের।