সাটুরিয়া উপজেলার কৃষকরা গত বছর ফুলকপি চাষে ভালো লাভ করায় এ বছর বেশি জমিতে চাষ করেছিলেন। তবে মৌসুমের মাঝামাঝি এসে ফুলকপির দাম এতটাই কমে গেছে যে, তা উৎপাদন খরচও তুলতে পারছে না। অনেকে বাধ্য হয়ে বিক্রির অযোগ্য ফুলকপি মাঠে ফেলে দিচ্ছেন কিংবা গরুকে খাওয়াচ্ছেন। অনেকে লোকসান এড়াতে ফসল কেটে ফেলে দিচ্ছেন।
কৃষকদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুর রাজ্জাক জানায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় ২৪৯ হেক্টর জমিতে ফুল কপি ও ৫৫ হেক্টর জমিতে বাধাঁ কপির আবাদ করেছিল কৃষকরা।
চাষীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে ১২ হাজার টাকার চারা লাগে। হালচাষে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। এছাড়া শ্রমিকের মজুরি সার কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা। জমির মালিককে বছরে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। এভাবে প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষে ৩০-৩৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি পিস চারা ৩ টাকা দিয়ে কিনে দুই মাসের বেশি সময় পরিচর্যা করে খরচ পড়ে ১০ টাকার ওপরে। জমি থেকে উত্তোলন করে বাজারে নিতে পরিবহন খরচসহ আরও ৫ টাকা ব্যয় হিসেবে প্রতি কপিতে খরচ ১৫ টাকা। আর এখন কপি বিক্রি করতে হচ্ছে ৫ টাকা।
সাটুরিয়া উপজেলার আইরমারা গ্রামে কৃষক বশির আহমেদ গত বছরগুলোয় কপি বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এ বছর তিনি ১৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে ১০ বিঘা জমির আগাম কপি বিক্রি করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পেয়েছেন। বাকি আট বিঘা জমির কপি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। বিক্রি করতে পারছেন না। এখন খেত পরিষ্কার করতে ওইসব কপি কেটে ফেলে রাখছেন। কিছু গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
উপজেলার চামারখাই এলাকার বাবু মাস্টার জানায়, ফুলকপির ১ লক্ষ চারা রোপন করেছিলেন তিনি। ৪০ হাজার কপি বিক্রি করার পর দাম না পাওয়াতে খেতে ফেলে রেখেছেন তিনি। তার মতো তার গ্রামের সকল কপি চাষীদের অবস্থা একই।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় চরম দাম কমে গেছে কপির। আগাম বিক্রি করে লাভবান হলেও বর্তমানে মারাত্নক লোকসান হয়েছে কপি চাষীদের। বিষয়টি আমরা কৃষি অধিদপ্তরে জানিয়েছি যদি সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কোন সহযোগীতা করা যায় তবে করবো।