নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে তাঁত বোর্ড থেকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় নেয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁত বোর্ড চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন কর্মকর্তাকে টানা ৬ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে৷
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনা কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষার্থীদের সন্তোষজনক আলোচনা হয়। সবশেষ, রাত ৯ টার দিকে তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যান আবু আহমদ সিদ্দিকী আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে দাবির বিপরীতে জরুরি সভার আয়োজন করবে মর্মে লিখিত পত্রে স্বাক্ষর করলে অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমদ ছিদ্দীকী, (এনডিসি), সদস্য (পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন) (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) (অ:দা:) আকরামুজ্জামান, প্রধান হিসাবরক্ষক এবং প্রকল্প পরিচালক (অ:দা:) সুকুমার চন্দ্র সাহা, প্রকল্প পরিচালক (অ:দা:), মো. আইয়ুব আলী, ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মনজুরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) মো. সাইফুল হক, নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফারজানা আলম, নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার, নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হকসহ ১৪ জন।
এর আগে, সোমবার বিকেল ৩টা থেকে সাহেপ্রতাপ এলাকায় অবস্থিত কলেজ ক্যাম্পাসের একটি সভা কক্ষে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, কলেজটি দেশের আরও ৯টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মতো পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তা কর্তৃপক্ষ করছে না।
এদিকে অবরুদ্ধ হওয়া কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ ও কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানকল্পে একটি সভা করতে তারা কলেজে আসেন। এসময় সবাই একটি রুমে মিটিং করা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবিতে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
তাদের অভিযোগ, এখানে বিএসসি কোর্সে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ৩২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু তারা কিছুই শিখতে পারছেনা। এখানকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় তার অধীনস্ত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পাঠদান করাচ্ছেন। এই সুবিধা পাওয়ায় তিনি এখানকার শিক্ষার্থীদের দাবি সত্ত্বেও কলেজটি বস্ত্র অধিদপ্তরে দিতে নারাজ। যার কারণে সর্বশেষ এক দফা দাবিতে এসব কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হবে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তাঁত বোর্ডের অধীন থেকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় কলেজ স্থানান্তরিত করার জন্য তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ ছাড়াও সভা সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। ফলশ্রুতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ হয়নি। তাঁতবোর্ড কর্মকর্তারা আজ ক্যাম্পাস পরিদর্শনে আসলে তারা একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে কর্মকর্তাদের৷ আলোচনায় কোনো সমাধান না আসায় টানা ৬ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তাঁতবোর্ড চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন কর্মকর্তাকে। পরে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত পত্রে আশ্বাস পেলে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে সরে দাঁড়ায়।