সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে চরাঞ্চলে গো-খাদ্যের সংকট এবং মূল্যবৃদ্ধি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় গো-খামারিরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৭ হাজার গো-খামার রয়েছে। এসব খামারে ১৬ লাখ গবাদিপশু পালিত হচ্ছে। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ গো-খাদ্যের প্রয়োজন হয়। তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় হাট-বাজারে খাদ্যের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি খামারিদের বিপাকে ফেলেছে। বিশেষ করে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা এলাকা, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, চৌহালী, এনায়েতপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
অনেক খামারি বলছেন, গবাদিপশুকে দানাদার খাদ্যের পরিবর্তে এখন ঘাস জাতীয় খাদ্য দেয়া হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন হাট-বাজারে অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এবার চরাঞ্চলেও তেমন ঘাস মিলছেনা। বর্তমানে ৩৭ কেজি ওজনের এক বস্তা গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৭’শ থেকে সাড়ে ১৮’শ, ৪০ কেজি ওজনের এক বস্তা ধানের গুড়া সাড়ে ৫’শ থেকে সাড়ে ৬’শ, ৩০ কেজি ওজনের এক বস্তা মুসুরের ভুসি ১ হাজার থেকে ১১’শ, ৭৪ কেজি ওজনের এক বস্তা তিলের খৈল সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার, ২৫ কেজি ওজনের এক বস্তা খেসারির ভুসি ১১’শ থেকে সাড়ে ১২’শ, ২৫ কেজি ওজনের এক বস্তা ভুট্টার ভুসি সাড়ে ৮’শ থেকে ৯’শ, ৭৪ কেজি ওজনের এক বস্তা সরিষার খৈল সাড়ে ৩ হাজার, এছাড়া এক তার খড় এখন ৬/৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে ভুসি, ফিড, খৈল, সয়াবিন ও খড়সহ সব ধরনের গো-খাদ্যর দাম অনেকটা বেড়েছে। তবে এসব খাদ্য সহনশীলভাবেই এখন বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরবর্তীতে ঘাসের জমি ক্ষয়ক্ষতি হয়। সে সময় গো খাদ্যের সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সংকট এখনও কেটে ওঠেনি। তবে বাজারে দানাদার খাদ্য ভুসি, খৈলসহ বিভিন্ন খাদ্যের মূল্য এখন কিছুটা বাড়ছে। এ কারণে খামারের গবাদিপশুর জন্য ঘাস উৎপাদন বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যেই গবাদি পশুকে প্রয়োজনে ঘাস খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।