"পান খাইতে চুন লাগে, ভালো বাসতে গুণ লাগে"—এই জনপ্রিয় গানের মতোই পান খাওয়ার অন্যতম উপাদান চুন তৈরিতে সারা দেশে দারুণ পরিচিতি পেয়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া গ্রামের দুই ভাই স্বপন রায় ও মানিক রায়। ঝিনুক ও শামুক দিয়ে তৈরি তাদের চুনের সুনাম এখন মাগুরা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি কেজি চুন ১০ টাকায় বিক্রি করে দুই ভাইয়ের কারখানা সপ্তাহে প্রায় ২০০ বস্তা (৪০ কেজি প্রতি বস্তা) চুন উৎপাদন করছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে চুন কারখানায় দেখা যায়, নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা ঝিনুক ও শামুক গুঁড়ো করে চুন তৈরি করছেন। এরপর ৪০ কেজি করে প্যাকেট করছেন।
নারী শ্রমিক মর্জিনা বেগম বলেন, পরিবারের কাজ শেষ করে চুন তৈরির কাজ করি। এতে প্রতিদিন ৪০০ টাকা আয় হয়। স্বামীর আয়ের সঙ্গে এ কাজ যুক্ত হওয়ায় সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।
পুরুষ শ্রমিক আবু বক্কর জানান, চুন কারখানায় কাজ করেই তার সংসার চলছে। দুই কারখানায় ১০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছেন।
কারখানার মালিক স্বপন রায় জানান, দীর্ঘদিন ধরে চুন তৈরি করছেন। চাহিদা থাকলেও পুঁজি সংকটের কারণে ব্যবসা বাড়াতে পারছেন না।
তার ভাই মানিক রায় বলেন, ভাইয়ের দেখাদেখি আমি দুই বছর আগে কারখানা শুরু করেছি। খুলনা থেকে ঝিনুক ও শামুক এনে চুন তৈরি করি। তবে পুঁজির অভাবে উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ঋণ পেতে তারা সহায়তা পাবে। ভবিষ্যতে সরকারি কোনো প্রকল্প এলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
রাজবাড়ীর দুই ভাইয়ের হাতে তৈরি চুন শুধু তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি নয়, বরং এলাকার বেকার সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসারিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।