ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের হরিয়াখালি গ্রামের মৃত মো. জহুর আলির স্ত্রী মালেখা খাতুন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী মালেখার বর্তমান বয়স ৭৮ বছর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত তার কপালে জোটেনি কোনো সরকারি ভাতা বা সাহায্য। বৃদ্ধা মালেখার প্রশ্ন, আর কত বছর বয়স হলে তিনি ভাতা পাবেন?
গত ৩০ বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার পর একা একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করতেন বিধবা-নিঃসন্তান-ভিক্ষুক মালেখা। স্বামী মারা যাওয়ার পর অভাবের সংসারে টানাপড়েনে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তার। বয়সের ভারে মনের জোরে হাঁটাচলা করতে পারেন মালেখা।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রোগে বাসা বাঁধছে। এখন অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মালেখা। অথচ এই বয়সে এসেও তার কপালে একটি বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড জোটেনি তার।
বৃদ্ধা মালেখা আক্ষেপ করে বলেন, আগে বাড়িতে বসে কাজ করে চলতে পারতাম, এখন আর পারি না। শরীরে বলশক্তি পাই না। বিধবা ভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডিসহ অসহায় মানুষের জন্য দেওয়া সরকারের কোনো সুযোগ-সুবিধা আমি পাই না। বারবার সাহায্য চেয়ে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তারা আমাকে একটি ভাতার কার্ড করে দেয় নাই।
তিনি আরও বলেন, 'কীভাবে যে চলতেছি, সেটা আমি আর আমার উপরওয়ালা জানেন। আমার থাকার ঝুপড়ি ঘরটিও পাশের বাড়ির রেজাউল করিম রাজুর মাধ্যমে মানুষের সহযোগিতায় তৈরি করা।
স্থানীয়রা বলেন, এই বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু উনার পক্ষে কোন সুপারিশ না থাকায় ভাতার আবেদন করেও কোন লাভ হয় নাই।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বয়স্ক ভাতার আবেদন করলেও অনিবার্য কারণেই আবেদন আটকে আছে মালেখা খাতুনের।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. হাসান কিবরিয়া জানান, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলাকে শতভাগ ভাতার আওতায় আনার ফলে নতুন করে বিধবা ও বয়স্ক ভাতার আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না। তবে মৃত্যু জনিত কারণে মাঝে মধ্যে ২/১ জনকে এই ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আসরাফ মিয়া বলেন, নতুন বরাদ্দ আসলে উনাকে দেয়ার চেষ্টা করবো।