রংপুর অঞ্চলে মাঠে মাঠে সরিষার ফুলের সমারোহ

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৪১ | অনলাইন সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর ব্যুরো:

রংপুরের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলে ছেয়ে গেছে। ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ ও মৌমাছির গুঞ্জনে প্রকৃতি যেন নতুন জীবনের বার্তা দিচ্ছে। এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি বছর বন্যার পর তিস্তা, ধরলা, করতোয়া নদীর চরের কৃষকরা সরিষা চাষ করেন। চলতি বছর বড় ধরনের বন্যা না হওয়ায় কৃষি দপ্তরও লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা করছে।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) জানায় রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ আট জেলায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এতে প্রতি হেক্টরে ১.৬ মেট্রিক টন ফলনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া চাষাবাদ ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ফসল ঘরে তোলার মাধ্যমে শেষ হবে। 

লালমনিরহাট জেলার বিস্তীর্ণ মাঠে সরিষার ব্যাপক চাষ হয়েছে। আমন ধান কাটার পর ফাঁকা জমিতে সরিষার আবাদ চলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

সরিষার ক্ষেতের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মধু চাষ। রংপুর বিভাগে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ২ হাজার মৌমাছির বক্স স্থাপন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার কেজি। প্রতি কেজি মধু ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হলে আয় হবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

এছাড়া আম ও লিচু বাগানে মৌমাছির বক্স স্থাপন করে অতিরিক্ত ৯ হাজার কেজি মধু উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। 

কৃষি বিভাগের মতে, সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির উপস্থিতি ফলন ৩-৫ শতাংশ বাড়ায়।

কৃষকরা জানান, সরিষা চাষে ব্যয় কম এবং লাভ বেশি। মাত্র চারবার চাষ এবং একবার সার ও দুবার পানি দিলেই সরিষা ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘায় খরচ হয় মাত্র ৩-৩.৫ হাজার টাকা।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন জানান, লালমনিরহাটে এবার বাম্পার সরিষার আবাদ হয়েছে। আমরা কৃষককে একের অধিক ফসল ফলানোর জন্য নানাভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। তাছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সঙ্গে অবস্থান করছে, যাতে কৃষকের কোনো প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আশা করা হচ্ছে, প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না ঘটলে এবার লালমনিরহাট জেলায় বাম্পার সরিষার ফলন হবে।

রংপুর বিনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডক্টর মোহাম্মদ আলী  জানান রংপুর বিভাগের ৮ জেলায়  প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বিনা সরিষা চাষ করেছে কৃষক ।বিনা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প হতে ও তেল ফসলপ্রকল্পএবং বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৫৮ উপজেলায় কৃষকদের উপকরণ খরচ  বিতরণ করেছে ।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, এবার সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। অনেক ক্ষেতে মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া রংপুর অঞ্চলে লিচু এবং আম বাগানসহ সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।