ঈশ্বরদীতে সরিষার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে সরিষার চাষ বেড়ে হয়েছে প্রায় তিনগুণ। চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। বেড়ে ওঠা গাছের ফুল দেখে অধিক ফলনের স্বপ্ন কৃষকের। বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন। ভোজ্য তেলের আমদানি কমাতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারি প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে উপজেলায় এ বছর ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ বলছে, অনুকূল আবহাওয়া এবং পরিচর্যার কারণে এ মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষে সরিষা তোলা শুরু হবে। খরচ ও পরিশ্রম কম হওয়ার পাশাপাশি লাভ বেশি হওয়ায় আবাদ বেড়েছে। ২০২১-২২ মৌসুমে ৬৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হলেও এবারে ২০২৪-২৫ মৌসুমে ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। সরিষার আবাদ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আবাদে কম খরচ করে বেশি লাভের কারণে প্রতিবছরই সরিষা আবাদে জমির পরিমাণ বাড়ছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরদীর মুলাডুলি, লক্ষীকুন্ডা, সাহাপুর, সলিমপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার আবাদ। সরিষা গাছে ফুল ফুটে হলুদের আভা অপরূপ শোভা ছড়িয়েছে মাঠ জুড়ে। সরিষা ফুলের হলুদ আভায় প্রকৃতি সেজেছে আপন মহিমায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্য লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি হবে বলে কৃষকেরা মনে করছেন। কৃষকেরা এখানে ছয়টি জাতের সরিষা আবাদ করে থাকে। উচ্চফলনশীল এগুলো হলো সরিষা বারি-৯, বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা-৯ এবং টরি-৭ জাত।
দাশুড়িয়ার মুনশিদপুরের কৃষক শহিদুল ইসলাম সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। আমন ধান কাটার পর মাঘ, ফাল্গুন দুই মাস জমি পতিত না রেখে সাথি ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করেছেন। এতে বাড়তি আয় হবে। সরিষা আবাদে তেমন শ্রম দিতে হয় না, খরচও কম। প্রতিবিঘায় খরচ হয়েছে ৪-৫ হাজার টাকা। এখন বিক্রি করে দামও ভালো পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
মুলাডুলির কৃষক মাহাবুবুর রহমান জানান, চার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করে যে লাভ হয়, তা অন্য ফসলের চেয়ে বেশি। বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি, গাছও খুব ভালো হয়েছে। মাঠের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে, গতবারের চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রহল্লাদ কুমার বলেন, সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে কৃষি মন্ত্রণালয় তিন বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই লক্ষ্যে সরিষা আবাদের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।