সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর পাংশায় স্কাউটিং কাউন্সিল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১০৯ নং চরলক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মালেককে ৬ জন শিক্ষক মিলে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক আব্দুল মালেক।
এসময় তিনি জানান, গত ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পাট্রাজোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খায়রুল ইসলাম তাকে কাব স্কাউটিং কাউন্সিল নির্বাচনের বিষয়ে জরুরি আলোচনা করার কথা বলে পাংশা শহরের মালেক প্লাজার ভেতরে ডেকে নেন।সেখানে উপস্থিত হলে শিক্ষক মোঃ খায়রুল ইসলামসহ ধানুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শাজাহানুল হক, রুপিয়াট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী শামসুল হক, নিশ্চিন্তপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম, কসবামাজাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রাশেদুর রহমান, কবি নজরুল ইসলাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন সকল শিক্ষক মিলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, স্কেল ও লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি হতবিহবল হয়ে পড়েন। মারধরের সময় তার পকেট থাকা ৫,২০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং তার জ্যাকেট ছিঁড়ে ফেলা হয়। আহত অবস্থায় তার মেজ ভাই আব্দুল খালেক মন্ডল তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, প্রহারকারী শিক্ষকগণের কারণে পাংশা উপজেলায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়পন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত পাট্রাজোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে তবে মারধরের বিষয়ে নিশ্চিত নই। তবে পরে বিএনপি নেতা রাজা ভাই ঘটনাটি মীমাংসা করে দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ধানুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শাজাহানুল হকও মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করলেও বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে, পরে আমরা একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেছি বলে জানান।
অন্যদিকে অভিযুক্ত রুপিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী শামসুল হক ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে দাবি করেন।
অভিযুক্ত নিশ্চিন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, ওইখানে মারামারি হয়নি, আগে বিরোধ ছিল, তাই মিমাংসা করা হয়েছে।
কসবামাজাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রাশেদুর রহমান বলেন, আমি প্রতিদিনই স্কুল শেষে পাংশা শহরে ঘুরতে যাই। ওইখানে মালেক ভাই উত্তেজিত হলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
কবি নজরুল ইসলাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, গত ১৩ জানুয়ারী মালেকপ্লাজায় স্কাউটিং কমিটি নিয়ে বসা হয়। সেখানে উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে স্বীকার করেন।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস.এম. আবু দারদা বলেন, বিষয়টি এখনো আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনায় পাংশায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে পাশাপাশি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারে হতাশা বিরাজ করছে। আর ভুক্তভোগী শিক্ষক আব্দুল মালেক ও তার পরিবারের লোকজন অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।