কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে চাঁদার দাবিতে হামলা, ভাঙচুর ও কয়েকটি লরি ও এক্সকেভেটর জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ লুট ও নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩টার পর।
মাতারবাড়ী বন্দরের কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাজ এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাজী আব্বাস উদ্দিন জানান, টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেয়ে গত বছর থেকেই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে জমির মানোন্নয়নে কাজ করছিলেন তারা। দুর্গম এলাকা হওয়ায় স্থানীয় কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি আরো বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পরিচয়ে ফোন করে তাদের কাছে কাজের ভাগ চায়। একপর্যায়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত তিন টার দিকে ৫০/৬০ জনের সশস্ত্র একটি দল এসে নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে ৫ টি লড়ি ও একটি এক্সেভেটর জ্বালিয়ে দেয়। এসময় ৪ হাজার জিও ব্যাগসহ ছোটখাটো বিভিন্ন যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া একই প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত তাজ এন্টারপ্রাইজের সহযোগী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি এন্টারপ্রাইজের তিনটি স্কেভেটর এবং তিনটি লোড ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, হামলার বিষয়টি তারা জেনেছেন। করণীয় ঠিক করতে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টিম মাতারবাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানান,স্থানীয় সন্ত্রাসী বাচ্চু ও নুরুল ইসলাম পুতুর সহযোগীরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ধারানা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় ধলঘাটার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাহার ইকবাল দাদুল তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ ধরনের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য। যারা এ ঘটনায় জড়িত, তারা দেশের উন্নয়ন ও শান্তি বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই, দ্রুত এসব সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাইছার হামিদ জানান, সকালেই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় কিছু লোকজন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়েছে। ঘটনার জানার পর পরই নৌ বাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পায়নি। তবে কর্তৃপক্ষ রাতেই এজাহার দিবেন বলে জানিয়েছেন।