রংপুর বিভাগ আটটি জেলা ও ৫৮টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের প্রবণতা। মাস্টারপ্ল্যানের অভাবে নগরজুড়ে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। ফলে ১৪ বছর আগে রংপুর বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনো মহানগরটি অগোছালো রয়ে গেছে।
কাগজে-কলমে রংপুর নগরের প্রধান সড়কটি ৬৫ ফুট চওড়া হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে এটি স্থানভেদে মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ ফুট। রাস্তার ওপর বিদ্যুতের পিলার, ড্রেনের চেয়ে রাস্তা উঁচু কিংবা খালের চেয়ে রাস্তা নীচু হওয়া যেন সাধারণ দৃশ্য। সাড়ে ১০ লাখের বেশি মানুষের বাস রংপুর মহানগরে।
সচেতন মহলের মতে, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় যত্রতত্র গড়ে উঠছে অবকাঠামো। এতে রংপুর শহরে যানজট, জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হচ্ছে আবাসিক ভবন, হোটেল-মোটেল, মার্কেট ও কলকারখানা। এভাবে নগরের সৌন্দর্য কমে গিয়ে রূপ নিয়েছে ইট-বালু-সিমেন্টের জঞ্জালে।
রংপুর মহানগর ইতিমধ্যে একটি নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হয়েছে। তবে এসব সমস্যার দায় নিতে কেউই আগ্রহী নয়। রংপুর সিটি করপোরেশন দোষারোপ করছে "রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ" গঠন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতাকে। ২০১৪ সালের ৮ জুন প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হলেও আজ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, দেশের অন্যতম অপরিকল্পিত নগরগুলোর একটি রংপুর। যানজট ও জলাবদ্ধতা কমাতে উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার পাশাপাশি একটি মাস্টার প্ল্যান জরুরি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, পরিকল্পিত নগরায়ণ ও উন্নত নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন বাস্তবায়ন করলে নগরটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব রূপ পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।