পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে সেলিম শাহ (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২০ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের পশারিবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম শাহ ওই গ্রামের মৃত দৌলাত শাহের ছেলে।
রবিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শাহাবানু বেগম অভিযোগ করেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি। সকালে তিনি জানতে পারেন, গ্রামবাসী তার স্বামীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, শনিবার রাত আড়াইটার দিকে পশারিবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ফিরোজের বাড়িতে সিঁধ কেটে দুই চোর প্রবেশ করে। তারা নগদ ৩০ হাজার টাকা, দুটি স্বর্ণের চেইন এবং একটি রূপার চেইন চুরি করে। এ সময় গৃহকর্তার ছেলে মোহাম্মদ আলী মান্না টের পেয়ে চোরদের প্রতিহত করতে গেলে তারা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে গ্রামবাসী দুই চোরকে ধাওয়া করে। এ সময় সেলিম শাহ গ্রামবাসীর হাতে আটক হলেও অপর চোর এমাদুল হোসেন মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ জনতা আটক সেলিমকে সড়কে ফেলে বেধড়ক পেটায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, "রাত আড়াইটার দিকে দুইজন চোর সিঁধ কেটে আমাদের ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে এবং একজনকে ধরে ফেলে। গ্রামবাসীর মারধরে সে মারা যায়, আরেকজন পালিয়ে যায়।"
স্থানীয় ইউপি সদস্য পলাশ মিত্র জানান, "আমার ওয়ার্ডের একটি বাড়িতে দুইজন চোর ঢুকেছিল। গ্রামবাসী একজনকে ধরতে সক্ষম হয়। আমি পুলিশে খবর দেওয়ার কথা বলি, কিন্তু সকালে শুনি সে গণপিটুনিতে মারা গেছে।"
ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ আনওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।"