রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে চলছে ইট পোড়ানোর কার্যক্রম। বনাঞ্চল, লোকালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি জমির টপ সয়েল এবং জ্বালানির জন্য কাঠ। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ৫৫টি ইটভাটার মধ্যে ৪৪টি ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কুমেদপুর ইউনিয়নে রয়েছে ৭টি ভাটা, যার মধ্যে কাঞ্চনপুর গ্রামে মাত্র ২০০ গজ দূরত্বে রয়েছে ৫টি ভাটা। বন বিভাগের আওতাধীন চৈত্রকোল ইউনিয়নে ৯টি, মদনখালি ইউনিয়নে ৬টি এবং টুকুরিয়া ইউনিয়নে ৭টি ভাটা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
উপজেলায় ৩৯টি ঝিকঝাক বা হাওয়া ভাটা এবং ১৬টি স্থায়ী চিমনি ভাটা রয়েছে। বেশিরভাগ ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নেই। তবে কিছু ভাটা মালিক বিএসটিআই, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা, ভ্যাট, ট্যাক্স ও ফায়ার সার্ভিসের অনুমতিপত্র দেখাতে পারলেও পরিবেশের ছাড়পত্রের অভাবে তারা অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভাটাগুলোতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কাঠ পোড়ানো হয়, যার বেশিরভাগই বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা। এতে বন উজাড়ের পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, ইটভাটায় কৃষি জমির টপ সয়েল ব্যবহার করার কারণে এসব জমিতে ২-৩ বছর ধরে কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন সম্ভব হয় না। এমনকি অতিরিক্ত খরচ করেও চাষাবাদে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না।
রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মন জানান, ২০২২ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ভাটাগুলো বন্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাদিজা বেগম বলেন, "ইতিপূর্বে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কিছু ভাটায় জরিমানা করা হয়েছে। তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"