ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সংঘর্ষে পুড়ে গেছে ৩টি বাস ও ৮টি সিএনজি, ভাঙচুর করা হয়েছে আরও ২টি বাস ও ২০টি সিএনজি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সিএনজি ও বাস মালিকদের মধ্যে স্ট্যান্ড ও চলাচল নিয়ে বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে কয়েকটি বাস ও সিএনজিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন—সাংবাদিক টিপু সুলতান, গিয়াস উদ্দিন (৩৫) সালাউদ্দিন (৩৫), নুরুল আমিন (৬৫), রাকিব (২৮), সুমন (২২), সোহেল (৩৫) নাম পাওয়া গেছে।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বলেন, "পৌরসভার নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সিএনজি শ্রমিকদের স্ট্যান্ড থেকে সরতে বলি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদের বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।"
অন্যদিকে, সিএনজি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন দাবি করেন, "বাস মালিকরাই পরিকল্পিতভাবে আমাদের সিএনজি স্ট্যান্ডে আগুন লাগিয়েছে। আমরা ফায়ার সার্ভিস ডাকলেও তারা গেট বন্ধ করে আগুন নেভায়নি।"
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সরকার বলেন, "আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি, তবে হতাহতের সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা যায়নি।"
এ ঘটনার পর ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।