ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করলেও ভুলক্রমে নিরীহ কৃষক বাদল হত্যার দায়ে ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আবুল মনসুর মিঞা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আফসার আলী (২২) পীরগঞ্জ উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের কাশমত আলীর ছেলে, মিজানুর রহমান নিজাম (২৮) একই গ্রামের আনছারুল ইসলামের ছেলে, সাগর (২২) রাণীশংকৈল উপজেলার মধ্যবনগাঁও গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে ও সুমন (২২) পীরগঞ্জ উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের শহর আলীর ছেলে। মিজানুর রহমান ছাড়া বাকী তিন আসামীই পলাতক রয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণের বরাতে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি এ্যাড.আব্দুল হালিম জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত মিজানুর রহমানের সাথে তার বড় ভাই মোখলেছের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। পুরো সম্পত্তি নিজের করে নিতে ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মিজানুর। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আফছার, সাগর ও সুমনকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে হত্যার দায়িত্ব দেন। ২০১৩ সালের ১০ জুলাই রাতে মোখলেছকে হত্যার জন্য ওঁত পেতে ছিল তারা। কিন্তু ওই সময় কৃষক বাদল পাশের গ্রামে অন্নপ্রাসনের দাওয়াতে যাচ্ছিলেন। অন্ধকারে তাকে মোখলেছ ভেবে ভুল করে গলা কেটে হত্যা করে আসামিরা। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় আঘাত করে এবং মরদেহ আখক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা মরদেহ দেখতে পেয়ে বাদলের পরিবার ও পুলিশে খবর দেয়। সন্দেহ হলে বাদলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১১ জুলাই ২০১৩ সালে পীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চারজনকেই গ্রেপ্তার করে এবং আদালতে তাদের জবানবন্দি নেয়। পরে জামিনে মুক্তি পেলেও আফছার, সাগর ও সুমন পালিয়ে যায়।
১০ বছরের বিচার শেষে আদালত চারজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়া প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার রায় ঘোষণার পর আসামি মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তবে বাকি তিনজন এখনো পলাতক।