কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমানের পদত্যাগ এবং প্রতিষ্ঠানটির চার শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবি জানিয়েছে কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ।
গত ২৩ জানুয়ারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে "যেমন খুশি তেমন সাজো" প্রতিযোগিতায় ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপন ও এবং মানহানির অভিযোগে তারা এই দাবি জানান।
বুধবার দুপুরে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় সাদিয়া সুলতানা নামের এক শিক্ষার্থী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করে এবং মানহানিকর কথা বলে। এটি পরিকল্পিত এবং এতে জড়িত আছেন কলেজের অধ্যক্ষ সোলাইমান। একই সঙ্গে শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল মোস্তফা ভুলু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ফারুকী, বিচারক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, মুফিজুল আলম এ ঘটনায় জড়িত। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষের পদত্যাগ, জড়িত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এর কারণ হিসেবে মুজিবুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই প্রতিযোগিতার ভিডিও পর্যালোচনায় দেখা যায় সাদিয়া সুলতানা নিজেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পরিচয় দিয়ে উপস্থিত সকলকে নিজের স্বামী বলে আখ্যায়িত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মারাত্বকভাবে অপমানিত করেছেন। প্রতিযোগিতায় অভিনয়ে এদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষকে বাঁশ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে চরমভাবে অপমানিত করেছেন। এছাড়া আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে খালেদা জিয়া এদেশের প্রত্যেক মানুষকে ১টি নয়, ২টি নয়, ৩টি করে বাঁশ দেবেন বলে অভিনয়ের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জঘন্যভাবে উপস্থাপন করে তাঁর সম্মানহানি করেছেন। অভিনয়ে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কক্সবাজার সরকারি কলেজের ২টি পুকুর ভরাট করে সাংস্কৃতিক আয়োজন করার কথা বলে বেআইনি কার্যক্রমের কথা বলা হয়েছে। যেমন খুশি তেমন সাঁজো প্রতিযোগিতার উক্ত প্রতিযোগী গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দু:শাসন আমলে যখন দেশনেত্রীর খালেদা জিয়ার বাসস্থানের প্রবেশ মুখের রাস্তার বালির ট্রাক দিয়ে যখন দেশনেত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল সেই দিন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জনগণের উদ্দেশ্যে বাস ভবন থেকে বের হয়ে যখন প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্যও ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে উক্ত ছাত্রী উপস্থাপন করে দেশনেত্রীকে চরমভাবে অপমানিত করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ জানুযারি ছাত্রদল কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই দিন ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে অধ্যক্ষ সোলায়মান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শত শত অছাত্র, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কলেজের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে দিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে জড়ো করে রাখেন এবং ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচালের ব্যর্থ চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদল ও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবি উল্লাহ, কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুর করিম, সাবেক সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।