ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সরিষা ক্ষেতের হলুদ ফুলের দোলা সবার চোখ আকর্ষণ করেছে। দিগন্তজুড়ে সোনালী রঙের এই ফুল বাতাসে দুলে উঠে, যেন সড়কের যাত্রী ও পথিকদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। সরিষার ফুলের হলুদ সৌন্দর্য শুধু মানুষকেই নয়, শস্য শ্যামল বাংলাকে মুগ্ধ করে, কৃষকের মুখে ফুটিয়ে তোলে হাসি।
কবি রুহুল আমীন রৌদ্র তার ‘সরিষে ফুল’ কবিতায় এই সৌন্দর্যের জলন্ত প্রমাণ দিয়ে লিখেছেন-
"সরিষে ফুল, সরিষে ফুল,
হাওয়ায় হাওয়ায় খেলে দোল,
হিম হিম পরশে, ঝিমঝিম নড়ে সে,
বালিকার কর্ণে, অপরূপ বর্ণে,
খেলে যায় দুল দুল, সরিষে ফুল, সরিষে ফুল।"পল্লী কবি জসীম উদ্দিন তার ‘আগমনী’ কবিতায়ও সরিষার সৌন্দর্য তুলে ধরে লিখেছেন-
"আরো একটুকা এগিয়ে গেলেই সরিষে খেতের পারে,
তোমারে আমার যত ভাল লাগে,
সে অপুরাগের হলুদ বসন বিছাইয়া আছে দিক দিগন্ত ভরে।"গফরগাঁও উপজেলা বর্তমানে সরিষার হলুদ রাজ্যে ভরপুর। শীতের হিমেল বাতাসে সরিষার ফুল দুলে ওঠে, আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠ। কৃষকের চোখেমুখে বাম্পার ফলনের আশায় হাসি ফুটে উঠছে, যেন সরিষার হলুদ ফুল তাদের স্বপ্নের প্রতীক।
গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাকুরা নান্নি জানান, চলতি মৌসুমে গফরগাঁও উপজেলায় সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার হেক্টর, তবে তা ছাড়িয়ে ২ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ফলে সরিষার আবাদ বাড়াচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, সরিষা উৎপাদন কৃষকের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে আনে। এর মাধ্যমে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়, ইউরিয়া সারের সাশ্রয় হয় এবং সরিষার খৈল জৈব সার ও গো-খাদ্যের কাজে লাগে। সরিষা ক্ষেতের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে প্রজাপতি ও মৌমাছিরা। শীতকালে এসব সরিষা ক্ষেতের দৃশ্য সত্যিই অভিরাম।