নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি পরিত্যক্ত স্থান থেকে জীবিত অবস্থায় এক নবজাতককে উদ্ধার করেছেন এক মুদি ব্যবসায়ী।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে শিশুটিকে কুড়িয়ে পান মামুন নামে স্থানীয় এক মুদি ব্যবসায়ী। পরে শিশুটিকে তিনি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে শিশুটির বয়স এক দিন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় জালাল টাওয়ারের পেছনে পরিত্যক্ত নির্জন স্থানে কাপড় দিয়ে ঢাকা অবস্থায় একটি নবজাতক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন ব্যবসায়ী মামুন। কাছে এগিয়ে গেলে তিনি শিশুটির কান্নার শব্দ শুনতে পান। পরে জীবন্ত নবজাতক শিশুটিকে কুড়িয়ে কোলে তুলে লোকালয়ে নিয়ে আসেন তিনি। এসময় শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ভিড় করেন। কেউ কেউ শিশুটিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে ওই ব্যবসায়ী শিশুটিকে সোনারগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানেও শিশুটিকে দেখতে ও দত্তক নিতে ছুটে যান অনেকেই।
মুদি ব্যবসায়ী মামুন জানান, জালাল টাওয়ারের পেছনে সরু রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অন্ধকারে একটি শিশু পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। শিশুটি কাপড় দিয়ে আবৃত ছিল। তবে মুখ ছিল সামান্য খোলা। মশার কামড়ে শিশুটির মুখমণ্ডল লাল হয়ে ছিল। ফলে যন্ত্রণায় শিশুটি কান্না করছিল। পরে কোনো কিছু চিন্তা-ভাবনা না করে শিশুটিকে নিরাপদ করার জন্য তিনি কোলে তুলে লোকালয়ে নিয়ে যান। এরপর সবার পরামর্শে তিনি শিশুটিকে সোনারগাঁ থানায় পুলিশের কাছে তুলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশুটিকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ হেফাজতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত শিশুটির পরিচর্যাসহ দেখভাল করা শুরু করে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী বলেন, ‘শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিবিড়ভাবে পরিচর্যাসহ যথাযথ চিকিৎসা ও দেখভাল করা হচ্ছে। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ রয়েছে। সেখানে থানা পুলিশ আছে। এছাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে খবর দেয়ার পর তিনি সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘শিশুটিকে কে ফেলে গেছে অথবা শিশুটির বাবা-মা কারা সে বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। শিশুটিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হবে। আদালত যে নির্দেশ দিবেন সে অনুযায়ী শিশুটির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’