১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ তিন জন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা জেলা কারাগার থেকে তারা মুক্তি পান।
মুক্তিপ্রাপ্ত অপর দুই নেতা হলেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম অটল ও যুবদল নেতা মোস্তফা নুরে আলম শ্যামল।
কারামুক্তির পর পাবনা জেলা কারাগারের সামনে থেকেই হাজারো নেতা-কর্মী তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন এবং বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে ঈশ্বরদীতে নিয়ে আসেন। পরে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে "ঈশ্বরদী-আটঘরিয়াবাসী" ব্যানারে তাদের জন্য এক গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
গণসংবর্ধনায় বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "আপনাদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমি নেতা হতে পেরেছি। আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হলাম। ঈশ্বরদীতে বিএনপির কেউ রাহাজানির সঙ্গে যুক্ত থাকবে না। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কাজ করবেন না, আইন নিজের হাতে না নিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন।"
তিনি আরও বলেন, "দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথম থেকেই আমাদের মিথ্যা মামলাটি দেখভাল করেছেন। কারাবন্দি নেতাদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন এবং আমাদের মুক্ত করতে যাবতীয় আইনি খরচ বহন করেছেন।" তিনি মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও জামিল আক্তার এলাহীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গণসংবর্ধনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, "বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেই আওয়ামী লীগ আজ মাইনাস হয়েছে। এখনও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, তবে যারা ষড়যন্ত্র করবে তারাই একদিন মাইনাস হয়ে যাবে।"
তিনি আরও বলেন, "বিএনপির নেতাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসিসহ বিভিন্ন দণ্ড দেওয়া হয়েছিল। যে বিচারক রায় দিয়েছিলেন, জনতার আদালতে তারও বিচার হবে।"
মামলার অন্যতম আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জামিল আক্তার এলাহী বলেন, "ঈশ্বরদীর প্রাণভোমরা জাকারিয়া পিন্টু। এই মামলায় মুক্তির জন্য আমরা ‘মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করেছিলাম। ঈশ্বরদীবাসীর ঐকান্তিক সহযোগিতার কারণে তাদের মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।"
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, রেল শ্রমিক দলের আহসান হাবিব, পৌর বিএনপির প্রস্তাবিত সদস্য সচিব বিষ্টু কুমার সরকার, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসলাম হোসেন জুয়েল ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি।
গণসংবর্ধনায় বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এস এম ফজলুর রহমান।