লালমনিরহাট জেলা সদরের হারাটি ইউনিয়নের পারভেজ কামাল পাভেল (৪৪) মাছ চাষ করে নিজের ভাগ্য বদলেছেন। কঠোর পরিশ্রম আর একাগ্রতা দিয়ে তিনি হয়েছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।
২০০৫ সালে মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন পাভেল। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি এখন ৩ একর ৭৫ শতাংশ জমিতে একটি বড় বিল ও একটি পুকুরের মালিক। সেখানে দেশি মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারকার্প, তেলাপিয়া, কালবসসহ নানা প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। বর্তমানে তার বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা।
শুরুতে সামান্য মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তীতে বাবার কাছ থেকে জমি নিয়ে মাছ চাষের পরিধি বাড়ান তিনি। ধাপে ধাপে সফলতা অর্জন করে এখন তার খামারে পাঁচজন কর্মচারী কাজ করছেন। তার ছোট ভাই বায়েজিদ ইসলামও সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার খামার থেকে মাছ কিনতে এসেছেন বহু ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে একজন রঞ্জিত রায় জানান, তিনি দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে পাভেলের খামার থেকে মাছ কিনছেন এবং বাজারে বিক্রি করে ভালো লাভ করছেন।
পারভেজ কামাল পাভেল চান, সরকার যদি সহযোগিতা করে, তবে তিনি তার মাছের প্রজেক্টটি আরও বড় করতে চান। তিনি বলেন, "পাশের ফাঁকা জমিগুলো কাজে লাগিয়ে মাছ চাষের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি। এতে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে।"
পাভেলের সফলতা দেখে নতুন উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হচ্ছেন। মাইদুল ইসলাম নামে এক তরুণ তার পরামর্শ নিয়ে নিজেও মাছ চাষ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, "পাভেল ভাই আমাদের জন্য উদাহরণ। তার মতো উদ্যোক্তা হতে পারলে নিজের পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব।"
লালমনিরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, "পাভেলের মতো উদ্যোক্তাদের আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। তার মাছ চাষ প্রকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে এবং দেশের আমিষের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে।"