ঢাকা শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা

লা‌ভের আশায় সাটুরিয়ায় বাড়ছে তামাক চাষ

লা‌ভের আশায় সাটুরিয়ায় বাড়ছে তামাক চাষ

অতিরিক্ত লাভের আশায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দিন দিন বাড়ছে তামাক চাষের পরিমাণ। গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় তামাকের আবাদ বেড়েছে ২৪ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, তামাকজাত কোম্পানির লোভনীয় প্রস্তাব, আগাম অর্থ সহায়তা ও বাজারে নির্ধারিত দামের নিশ্চয়তা পাওয়ায় তারা দিন দিন তামাক চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৮৪ হেক্টর জমিতে তামাকের আবাদ হয়েছে, যেখানে গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৬০ হেক্টর। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হচ্ছে তিল্লী ইউনিয়নে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়েক বছর আগেও যেখানে ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা ও আগাম জাতের সবজি চাষ হতো, সেই জমিগুলোতে এখন তামাকের চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে নদীর পার্শ্ববর্তী তিল্লী, বরাইদ ও দিঘুলীয়া এলাকায় তামাকের আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। এসব এলাকায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও তামাক চাষের কাজে যুক্ত হচ্ছেন।

পশ্চিম চর তিল্লী এলাকার কৃষক মো. শফিকুল (৫০) বলেন, “আমরা অন্যান্য ফসল চাষ করে ন্যায্যমূল্য পাই না, শ্রমিকের মজুরিও বেশি। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো আগাম টাকা, বীজ ও সার দিয়ে সাহায্য করে। এতে লাভ বেশি হয়, তাই তামাক চাষ করছি।”

একই গ্রামের সেলিম মোল্লা জানান, অধিক লাভের কারণে তিনিসহ তার এলাকার অধিকাংশ কৃষকই তামাক চাষে ঝুঁকছেন। তবে এই চাষের ফলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথাও তিনি স্বীকার করেন।

তামাক চাষের কারণে শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে। পশ্চিম চর তিল্লীর বাসিন্দা আকাশ (১৯) বলেন, “আমার বাবা আমিনুর ইসলাম দীর্ঘদিন তামাক চাষ করতেন। তামাকে কাজ করতে করতে তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও ভালো না হওয়ায় ঢাকায় নিয়ে অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করাতে হয়েছে।”

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমরা কৃষকদের তামাক চাষ থেকে বিরত রাখার জন্য নিয়মিত সভা, সেমিনার ও উঠান বৈঠক করছি। তবে অধিক মুনাফার লোভে কৃষকরা আমাদের পরামর্শ মানছেন না।”

তামাক,চাষ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত