দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে আমগাছগুলো সেজেছে সোনালি মুকুলে। শহর থেকে গ্রাম—সব জায়গায় আমগাছের ডালপালা নুয়ে পড়েছে মুকুলের ভারে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে মিষ্টি সুবাস, যা জানান দিচ্ছে আসন্ন আমের মৌসুমের। বাগান মালিকরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গাছের পরিচর্যায়, ভালো ফলন নিশ্চিত করতে ছত্রাকনাশকসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন আমবাগানে দেখা গেছে, অধিকাংশ গাছে পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে। এবারের আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশায় দিন গুনছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগও বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৮ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে ২৫৯টি আমবাগান রয়েছে। এসব বাগান থেকে ৭৫ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ফজলি, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, গোপালভোগ, আমরুপালি, মল্লিকা, লক্ষণভোগ, বোম্বাইসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের আমের চাষ হচ্ছে।
বাগান মালিকরা জানান, এবার তুলনামূলকভাবে শীত কম থাকায় আগেভাগেই মুকুল এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, যাতে পোকা-মাকড় ও রোগবালাই আক্রমণ করতে না পারে।
আম ব্যবসায়ীরাও আশাবাদী, এবার আমের উৎপাদন ভালো হলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ১০% আমগাছে মুকুল এসেছে। কৃষকদের তিনটি ধাপে স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—মুকুল আসার আগে, মুকুল আসার পর এবং মুকুল গুটি বাঁধার সময়, যাতে রোগবালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, "আমাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করছেন এবং কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন। যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে, তাহলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশা করছি।"