মহান ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পার হলেও কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ১৩টি স্কুল ও ৬টি আলিয়া মাদরাসায় গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ টিতে স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। সেগুলো হল সহিলাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুরুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেছগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভেরনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পংপাচিহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ধলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বানাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনোয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী আবদুল হাফিজ ভূঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মাধ্যমিক ও নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৪টি। সবটিতেই রয়েছে শহীদ মিনার। ২টি কলেজ, দুটিতেই রয়েছে শহীদ মিনার। ৬টি এমপিওভুক্ত আলিয়া মাদরাসা ১টিতেও নেই শহীদ মিনার। সেগুলো হল, সহিলাটী আবদুল হালিম হোসাইনিয়া দাখিল মাদরাসা, ধলা আলিম মাদরাসা, তালজাঙ্গা ইউনিয়ন আলিম মাদরাসা, কাজলা আলিম মাদরাসা, বানাইল আলিম মাদরাসা ও আকুবপুর আলিম মাদরাসা।
সোমবার সরজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, বেশিরভাগ শহীদ মিনার অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। অনেক শহীদ মিনারে লতাপাতা, গাছ জন্ম নিয়েছে। শহীদ মিনারগুলোতে নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। উপজেলার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আমরা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরির দাবি জানাই।
উপজেলার সহিলাটী আবদুল হালিম হোসাইনিয়া দাখিল মাদরাসা (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মাওলানা আইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাদরাসায় জায়গার সমস্যার কারণে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, জায়গা ও আর্থিক সমস্যার কারণে অনেকেই শহীদ মিনার স্থাপন করতে পারেননি। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলোর তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আহসানুল জাহিদ বলেন, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ গঠনে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য শহীদ মিনার বাঙালি জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শহীদ মিনার স্থাপনে আন্তরিক হওয়া অতীব প্রয়োজন। উপজেলার ৬টি আলিয়া মাদরাসায় শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য তালিকা পাঠিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, একুশের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে শহীদ মিনারের বিকল্প নেই। প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব।