জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলো এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। কোনো গেটম্যান নেই, নেই পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা, কেড়ে নেয় প্রাণ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে দিন দিন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এসব ক্রসিং।
সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় যমুনা, অগ্নীবিনা ও জামালপুর এক্সপ্রেসসহ মোট ৬টি ট্রেন চলাচল করে। পুরো উপজেলায় প্রায় ২৫টি রেল ক্রসিং রয়েছে, তবে মাত্র ৯টিতে গেটম্যান রয়েছে। অপর ১৬টি লেভেল ক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত, যার মধ্যে কিছু ক্রসিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
উপজেলার তারাকান্দি রেলস্টেশন সংলগ্ন ৮ লাইনের বিশাল রেল ক্রসিংটি গেটম্যানবিহীন। সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকে না দেখেই হেঁটে রেললাইন পার হচ্ছেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, প্রাইভেটকারসহ নানা যানবাহনও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এতো বড় রেল ক্রসিং থাকলেও এখানে কেন গেটম্যান নেই, তা বোধগম্য নয়।
জামতলা এলাকার অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়েও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় বাসিন্দা রাজু মিয়া জানান, "এখানে আগে একাধিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে। সম্প্রতি ৪ বছরের এক শিশু ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছে। দুই পাশে গাছপালা থাকায় ট্রেন আসছে কি না, তা বোঝা যায় না। গেটম্যান নিয়োগ একান্ত জরুরি।"
তারাকান্দি রেলস্টেশন এলাকায় নছিমন চালক গোলাপ মিয়া বলেন, "এখানে আটটি রেললাইন রয়েছে, অথচ কোনো গেটম্যান নেই। আমাদের জীবন নিয়ে ঝুঁকি নিতে হয়। অনেক সময় গাড়ি রেললাইনের ওপর উল্টে যায়, তখন বড় দুর্ঘটনা ঘটে।"
রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, "গেটম্যান নিয়োগের বিষয়ে আমাদের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। এটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। যেসব ক্রসিংয়ে গেটম্যান নেই, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে কিছু ক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে।"