২৭টি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সাতক্ষীরার সাবেক ডিসি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী পরিবারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আবু হানিফ ছোটনের পিতা শহর আলী, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ওবায়দুল্লাহ, ডা. ফিরোজ হোসেন, গুলিবিদ্ধ হওয়া আব্দুল গফর, ভুক্তভোগী আমিরুল ইসলাম লাভলুসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালে সাতক্ষীরায় পুলিশের গুলিতে অর্ধশতাধিক জামায়াত-শিবির ও বিএনপির নেতাকর্মী হত্যার নেপথ্যে ছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরি মঞ্জুরলে কবির ও ডিসি নাজমুল আহসান। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার আস্থাভাজন পুলিশ সুপার চৌধুরি মঞ্জুরুল কবির ও বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে অবসরেও পাঠানো হয়েছে। তবে বহাল তবিয়তে আছেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচন ও খুন গুমে অংশ নেওয়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।
২০১৩ সালে তিনি সাতক্ষীরার নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াত আমির সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেকের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। জেলা প্রশাসক হিসেবে নাজমুল আহসানের যোগদানের ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হন আগরদাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা মো. আনোয়ারুল ইসলাম। তার সময়ে শুধু সাতক্ষীরা জেলাতেই রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। এদের সবাই স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী।
এছাড়া আরও ২৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক ব্যক্তি। তার নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর বিচারবহির্ভূত এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাতক্ষীরার নাগরিকদের মধ্যে তখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করেছিল। রাত শুরু হলেই আতঙ্কে বিভিন্ন স্থানে চলে যেত নারীরাও। এসময় অবিলম্বে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতিসহ শাস্তির জানান তারা।
মানববন্ধনে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারক লিপিও প্রদান করা হয়।