মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সরিষা ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষক পরিবার। এরই মধ্যে আড়িয়ল বিল, পদ্মার চরসহ শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষেতের সরিষা কাটা চলছে পুরোদমে। এখন চলছে সরিয়া মাড়াই ও ঝাড়াই কাজের ব্যস্ততা। আড়িয়ল বিল এলাকার বাড়ৈখালী, মদনখালী, শ্রীধরপুর, আলমপুর, লস্করপুর, ষোলঘর, থৈয়াগাঁও ও বীরতারা এলাকায় আক্রান্ত ক্ষেতে সরিষার আশানুরূপ ফলন হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৫৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে। এ বছর বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ সরিষা উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বাড়া-শুকনা আলো মাখি সরিষার দানার মণ কেনা-বেচা হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। এছাড়া প্রকারভেদে সাদা দানাদার শ্বেতি সরিষার মণ ২৮০০-৩০০০ টাকা ও দেশী জাতের কালো দানাদার রাই/চৈতা সরিয়ার মণ বিকিকিনি হচ্ছে ৩৬০০-৩৮০০ টাকা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এই অঞ্চলে বেশিরভাগ জমিতেই হাইব্রিড বারি- ১৩, ১৭, ১৯ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। দেখা গেছে, সরিষা কাটার পর মাঠে কিংবা বাড়ির আঙ্গিনায় কৃষক পরিবারের সদস্যরা মাড়াই শেষে রোদে শুকাচ্ছেন। গৃহস্থ পরিবারগুলো স্থানীয় মিলগুলোতে নতুন সরিষা ভাঙ্গাতে ভিড় করছেন।
বাড়ৈখালী বাজার এলাকার আনোয়ার হোসেন নামে একজন জানান, ঘানিতে এক মণ সরিষা ভাঙ্গিয়ে ১৫ লিটার ভোজ্যতেল পাওয়া যাচ্ছে।
শ্রীধরপুর গ্রামের কৃষক মনোরঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী কৌশলা রানী মন্ডল বলেন, তার স্বামী খোলাবাজার থেকে বীজ ক্রয় করে প্রায় এক বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেন। প্রায় ৫ মণ সরিষার উৎপাদন হবে। এতে সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটবে। সরকারিভাবে কোনো সরিষার বীজ পাননি তারা।
ভাগ্যকুল এলাকার মো. কাউসার খান বলেন, এ বছর প্রায় ২০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার ফলন ভালোই হয়েছে। কম খরচে অধিক লাভজনক সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন চরের কৃষকেরা।
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, উপজেলায় ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে (তেল জাতীয়) প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশি সরিষা জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, ১৭, ৯ ও বিএডিসি-১ জাতের সরিষা চাষে ৩০টি (রাজস্ব) প্রদর্শনী রয়েছে। সরিষা চাষে উপজেলায় মোট ৭শ কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।