ঢাকা রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মোহনপুরে রাবার ড্যামে বাড়ছে পানি

মোহনপুরে রাবার ড্যামে বাড়ছে পানি

দিনাজপুর সদর উপজেলার আত্রাই নদী মোহনপুর রাবার ড্যাম ও চিরিরবন্দর উপজেলার কাঁকড়া নদীতে সাঁইতাড়া রাবার ড্যামে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে আত্রাই ও কাঁকড়া দুটি নদীর ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় পানি বেড়েছে। সেচের পানির যে সংকট দেখা দিয়েছিল তা কেটে যেতে শুরু করেছে। কৃষক বোরো জমিতে নদীর পানি ব্যবহার করে সেচ দিতে পারছেন।

জানা যায়, কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালে চিরিরবন্দর উপজেলার কাঁকড়া নদীতে সাঁইতাড়া এলাকায় একটি এবং ২০১৪ সালে আত্রাই নদীতে। মোহনপুর এলাকায় আরেকটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সম্প্রতি মোহনপুর রাবার ড্যামটিতে ছিদ্র হওয়ায় পানি ধরে রাখা যাচ্ছিল না। অন্যদিকে কাঁকড়া নদীর খননকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় পানি থাকছে না। ফলে ড্যাম দুটি কাজে লাগছিল না কৃষকদের। এ অবস্থায় গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিতে শুরু করেন কৃষকরা। এতে সেচ খরচ দ্বিগুণের বেশি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

দিনাজপুর এলজিইডি সূত্র জানায়, ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় পানি মজুত রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন ১৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের রাবার ড্যাম নির্মিত হয়েছে আত্রাই-কাঁকড়ার মোহনার ৩০০ গজের কাছাকাছি মোহনপুর এলাকায়। অন্যদিকে কাঁকড়া নদীর ওপর আট কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে (১৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের) সাঁইতাড়া রাবার ড্যামটি নির্মাণ করা হয়।

সম্প্রতি আত্রাই ও কাঁকড়া নদীর তীরবর্তী এলাকা এবং মোহনপুর ও সাঁইতাড়া রাবার ড্যাম এলাকার স্থানীয় কৃষকরা সেচের পানি পাচ্ছিলেন না। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছরই বোরো মৌসুমে মোহনপুর রাবার ড্যামটিতে সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিবার চালু করার সময় দেখা যায় ছিদ্র আছে। কর্তৃপক্ষ এর স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা নেয় না। খননকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় পানি আত্রাই নদীর দিকে নেমে যাচ্ছিল। ফলে কাঁকড়ার উভয় পাড়ের কৃষকরা পানি পাচ্ছিলেন না। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তড়িঘড়ি রাবার ড্যামের মেরামতের ব্যবস্থা শুরু হলে ড্যাম ফোলানো শুরু হয় এচ পানি বাড়তে দেখা যায়।

চিরিরবন্দর ও সদর উপজেলার দুই কৃষি কর্মকর্তা জানান, দুই উপজেলার আড়াই থেকে তিন হাজার হেক্টর জমি রাবার ড্যামের সেচ সুবিধার আওতায় আছে। কৃষকরা মোহনপুর, কাঁকড়া এবং চিরিরবন্দরনদী থেকে শ্যালো মেশিন কিংবা বিএডিসি এলএলপির মাধ্যমে পানি নিতে পারেন স্বল্প খরচে। নদীগুলোর উভয় পাড়ে ৫৩টি এলএলপি পাম্প, ১৪টি শ্যালো মেশিন ও ২১টি বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা আছে। ড্যাম ফোলানো শুরু হওয়ায় সেচের পানির সংকট কেটে যেতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নদী থেকে সেচের পানি তুলতে কোনো সমস্যা হবে না।

এ বিষয়ে দিনাজপুর এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী ফাওজুল কবীর বলেন, রাবার ড্যাম দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড্যামের দুটি ব্যাগ ছিদ্র ছিল। তা প্রাথমিকভাবে মেরামত করে মোহনপুর রাবার ড্যামের পানি দিয়ে ফোলানো হচ্ছে। আশা করি সেচের পানির সমস্যা হবে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা এরই মধ্যে নতুন ব্যাগের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। নতুন ব্যাগ এলে স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে।

রাবার ড্যাম,বাড়ছে পানি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত