ঢাকা রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বীরগঞ্জে কৃষকের পেঁয়াজের বীজে বাজিমাত

বীরগঞ্জে কৃষকের পেঁয়াজের বীজে বাজিমাত

চাষ করে লাভের অঙ্কটা বেশি হওয়ায় পেঁয়াজের বীজের আরেক নাম হয়ে উঠেছে 'কালো সোনা'। সেই কালো সোনার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চাষিরা। সারাদেশে পেঁয়াজ বীজের চাহিদার ৪০ শতাংশ যোগান আসে এই উপজেলা থেকে। কৃষকরা এবার ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার আশা করছেন। তাই তারা এখন পেঁয়াজের বীজ পরিচর্যা ও পরাগায়নে ব্যস্ত। কৃষি বিভাগও আশাবাদী যে, এবার উপজেলায় ব্যাপক হারে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হবে।

পেঁয়াজের সাদা কদম শুকিয়ে বের হয় কালো বীজ, যার বাজার দর আকাশছোঁয়া। তাই এই বীজকে বলা হয় 'কালো সোনা'। দিনে দিনে এই পেঁয়াজ বীজের আবাদ বেড়েছে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। পলাশবাড়ী, শিবরামপুর ও পাল্টাপুর ইউনিয়নের উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ গুণ ও মানে অন্যতম সেরা। এখানকার পেঁয়াজের বীজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক পেঁয়াজ বীজের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এমদাদুল, বাতেন, মাসুম, শহিদুল ইসলাম ও নুরুল ইসলামসহ প্রায় ৩০-৩৫ জন কৃষক। এই চাষের মাধ্যমে তাদের সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বীরগঞ্জ উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫০ হেক্টর জমিতে, যা ছাড়িয়ে ১৫১ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বীজের আবাদ হয়েছে ৮ হেক্টরের বেশি জমিতে।

পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বরবাড়ী গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, এবছর ১৭৫ টাকায় এক কেজি বীজ ক্রয় করে ৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। গতবছর ২২ থেকে ২৫ কেজি বীজ উৎপাদন করে প্রায় ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

তিনি আরও জানান, জমি চাষ, বীজ, রোপণ খরচ, সার, কীটনাশক, সেচ, নিড়ানি, বাঁশ-সুতলি ইত্যাদি মিলিয়ে প্রতি বিঘায় খরচ দাঁড়াবে প্রায় এক লাখ টাকা। তবে প্রতি বিঘায় ২২-২৪ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা করছেন। যদি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বীজ সর্বনিম্ন দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারেন, তবে তার তিন বিঘা জমির উৎপাদিত বীজ বিক্রি করে প্রায় ৬ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন।

পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক আহমেদ সিদ্দিকী মানিক বলেন, "এবছর পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের ইউনিয়নে কৃষকদের নিজস্ব পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আগামী বছর এই ইউনিয়নে কৃষকদের নিজেদের উৎপাদিত বীজ দিয়ে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ চাষ করা সম্ভব হবে।"

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, "বীরগঞ্জ উপজেলায় পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে কৃষকরা নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কৃষি বিভাগ নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করছে। উৎপাদিত বীজ প্যাকেটজাত করে সীড সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে বীজ ব্যবস্থাপনা ও বিপণনে কৃষকরা ভালো ভূমিকা রাখছে।"

বাজিমাত,বীজে,পেঁয়াজ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত