ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ

মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ

কক্সবাজার শহরে প্রবেশের প্রধান সড়ক ধরে এগোলেই বিজিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে পড়বে এক অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন—সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ। মুঘল আমলের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই প্রাচীন মসজিদটি স্থানীয়ভাবে গায়েবি বা পোটকা মসজিদ নামেও পরিচিত।

স্থানীয় প্রবীণদের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে জমিদার সাচি চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। তবে এর সঠিক ইতিহাসের কোনো লিখিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ার এক নির্জন ও মনোরম স্থানে মসজিদটি অবস্থিত। এর উত্তরে বিস্তীর্ণ দীঘি, পূর্ব ও পশ্চিম পাশে কবরস্থান এবং দক্ষিণে কৃষিজমি রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদটির উপরে রয়েছে একটি বড় গম্বুজ এবং পাশে আরও দুটি ছোট গম্বুজ। গম্বুজের শীর্ষে পদ্ম-কলস নকশার শোভা যুক্ত করা হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরভাগে লতাপাতা ও ফুলের কারুকাজ রয়েছে, যা মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনন্য বৈশিষ্ট্য বহন করে। ভেতরে পশ্চিম দেয়ালের মাঝখানে একটি সুদৃশ্য মিহরাব রয়েছে।

মসজিদ কমিটির সদস্য আবদুর শুক্কুর জানান, মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে মূল স্থাপত্যশৈলী অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। তার মতে, এটি ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে নির্মিত হয়েছিল।

প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের ইমাম মাওলানা আলাউদ্দিন বলেন, এখানে ইমামতির দায়িত্ব পালন করতে পেরে তিনি গর্বিত। দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন এবং অনেকেই মানতের জন্যও মসজিদটি পরিদর্শন করেন।

মুঘল আমলের স্থাপত্যশৈলীর এই নিদর্শনটি কক্সবাজারের ঐতিহাসিক সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি পাক—এমনটাই চান স্থানীয়রা। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা, শিক্ষা ও পর্যটন বিকাশেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মসজিদটির যাতায়াতের রাস্তার উন্নয়ন না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা রয়েছে। তরুণ সমাজ এই ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সাচি চৌধুরী জামে মসজিদ,নিদর্শন,মুঘল,স্থাপত্যশৈলী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত