ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় লিচুর গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। সুমিষ্ট সুবাসে ভরে গেছে চারপাশ। গাছে গাছে ছড়িয়ে পড়া হলুদাভ-সবুজ মুকুল প্রকৃতিকে এনে দিয়েছে অনন্য সৌন্দর্য। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত লিচু বাগানগুলোতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলায় পাটনাই, বোম্বাই, মাদ্রাজি, বেদেনা ও চায়না থ্রি জাতের লিচু বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এবার প্রতিটি লিচু গাছেই পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রেকর্ড পরিমাণ লিচুর ফলন হবে বলে আশাবাদী চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজমপুর, রামধননগর, চানপুর, দুর্গাপুর, খারকোট, মিনারকোট ও নিলাখাতসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হচ্ছে, যা স্থানীয় কৃষকদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠেছে।
চাষিরা বলছেন, এখানকার লিচুর মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। লিচু লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর চাষের পরিধিও বাড়ছে।
গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গে তা সংরক্ষণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। নিয়মিত স্প্রে করা, সার প্রয়োগ এবং সেচ দেওয়ার কাজ করছেন তারা।
চাষি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘‘ফুল আসার আগেই গাছের পরিচর্যা করতে হয়। এখন প্রতিটি গাছে মুকুল এসেছে, তাই নিয়মিত পরিচর্যা করছি।’’
আরেক চাষি মো. সুহাগ মিয়া জানান, তার চারটি বাগানে ১২০টি লিচু গাছ রয়েছে এবং সবকটিতেই মুকুল এসেছে। নিয়মিত স্প্রে ও পরিচর্যা করলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘‘আখাউড়ার মাটি লিচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা সময়মতো সঠিক পরিচর্যা করতে পারেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে, যা বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা জাগিয়েছে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে প্রাকৃতিক পরিস্থিতির ওপর।’’