শুক্রবার শেষ হয়েছে ২০ রমজান। ঘনিয়ে আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। রমজানের শেষ মুহূর্তে এসে কক্সবাজারে জমে উঠেছে ঈদবাজার। শহরের শপিংমল, ছোট-বড় সব মার্কেটে মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকে। শহরের বড় বড় বিপণী বিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতেও কেনাকাটার উৎসব চলছে। অপরদিকে ঈদবাজারের নিরাপত্তা ও দাম মনিটরিংয়ে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
গতকাল শুক্রবার ঈদবাজার ঘুরে গেছে, শহরের বড়বাজার, ফজল মার্কেট, আলী মার্কেট, ফিরোজা শপিং মল, নিউ মার্কেট, সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, ইডেন গার্ডেন ও আপন টাওয়ারসহ ফুটপাতের দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে, দুপুর বেলা ও ইফতারের পর মার্কেটগুলো খুবই জমজমাট হয়ে ওঠে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শহরের মার্কেট শপিংমলগুলোকে বাহারি সাজে সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সবারই নজর প্রিয় জিনিসটি কেনার দিকে। বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে ক্রেতারা পছন্দের পোশাকটি কিনছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, স্বাভাবিকভাবে রমজানের প্রথম দিকে মার্কেট ফাঁকা ছিল। তবে ১০ রমজানের পর থেকে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। ১৫ রমজান থেকে জমতে শুরু করে ঈদবাজার। এরপর থেকে জমজমাট হয়ে উঠে সব ধরনের ঈদপণ্যে মার্কেট ও দোকানগুলো।
দোকানিরা বলছেন, বরাবরের মতো এবারও ঈদবাজারে মেয়েরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ফ্যাশনের থ্রি পিস নিয়ে ব্যস্ত। তবে শাড়ির দোকানগুলোতেও নানা ধরনের শাড়ি এবার মূল আকর্ষণ। শহরের মার্কেটগুলোতে এবার ভালোমানের শাড়ি ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। লেহেঙ্গা ১০-১২ হাজার, থ্রিপিস ৫-১০ হাজার। বেচাবিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট দোকানিরা।
অন্যদিকে পুরুষ ক্রেতাদের চাহিদায় এগিয়ে জিন্স প্যান্ট, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শর্ট-শার্ট, লংশার্ট, টু-পিসসহ সব আধুনিক পোশাক। পাঞ্জাবি ২-৩ হাজার, প্যান্ট ১-৩ হাজার, ফতুয়া ১ হাজারের মধ্যে, ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের নানা ধরনের পোশাক ৫ শত থেকে ৫ হাজার, জুতা ১ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, মার্কেটগুলোতে এবার বিদেশি কাপড়ের কদর বেড়েছে। তবে দেশীয় নতুন ডিজাইনের কাপড়ের বেশ চড়া দাম রয়েছে। ফ্যাশনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুনত্ব এসেছে কিন্তু দাম নিয়ে অসন্তোষ ক্রেতাদের। গত বছর যে পাঞ্জাবি ১৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো; এ বছর তার দাম আড়াই হাজার টাকা কিনতে হচ্ছে বলে দাবি ক্রেতাদের।
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য শহরের ফুটপাতের মার্কেটগুলোতেও পণ্যের বড় পসরা বসানো হয়েছে। এসব মার্কেটও ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি ও কেনাকাটায় সরগরম হয়ে উঠেছে। ক্রেতারা সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কেনাকাটা সারতে ভিড় জমাচ্ছেন দোকানগুলোতে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, শুরু কক্সবাজার শহর নয়, প্রতিটি উপজেলায় বড় বড় বাজারগুলোতে ঈদমার্কেটগুলো জোরেসোরে বেচাকেনা চলছে।
জানতে চাইলে কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বলেন, ‘শহরের সব ধরনের ঈদ মার্কেটে সমানতালে বেচাকেনা চলছে। দোকানদার ও ক্রেতাদের সুবিধার্থে সাধারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদবাজারে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও আনসরসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহলদল নিয়মিত টহল জোরদার রেখেছে। এছাড়া নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছেন প্রশাসন।
জানতে চাইল কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘জেলাজুড়ে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও নিরাপত্তা ঘাটতি নেই। তারপরও কেউ অনিরাপদ বোধ করলে সাথে জানালে রেসপন্স করা হবে।