ঢাকা সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

লোকসানে চৌদ্দগ্রামের কৃষকরা, সবজি যাচ্ছে গরুর পেটে

লোকসানে চৌদ্দগ্রামের কৃষকরা, সবজি যাচ্ছে গরুর পেটে

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে শাকসবজির দাম না থাকায় কয়েক প্রকার সবজি যাচ্ছে গরুর পেটে। গত বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর চলতি মৌসুমে শাক সবজির সর্বোচ্চ আবাদ ও বাম্পার ফলন হওয়ায় পরও লোকসানে স্থানীয় কৃষকরা।

উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে সর্বনিম্ন বাজার দরেও নেই লাউ কুমড়ার ক্রেতা। তাই নামমাত্র মূল্যে কিনে অথবা নিজের উৎপাদিত শাকসবজি নিজের গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, গত বছর বলেন বন্যার কারণে অনাবাদি জমিতে শীত মৌসুমে আগাম শাক সবজি আবাদ করে স্থানীয় কৃষকরা। পাশাপাশি পারিবারিকভাবে বাড়ির আঙিনা ও ভিটায় সর্বোচ্চ আবাদ হয় শাক সবজি। এবং উৎপাদনও হয় বেশি। এর ফলে বাজারে স্থানীয়দের চাহিদা কমে যাওয়া এবং সরবরাহ বেশি থাকায় শাক সবজির মূল্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামে। শনিবার(২২ মার্চ) বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে ১০০ টাকায় ১২ কেজি টমেটো, লাউ ৭-১০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার পৌর এলাকার ফালগুনকরা গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, এবার অকল্পনীয় ফলন হয়েছে। বাজারে তেমন চাহিদা না থাকায় প্রথম থেকে লাউ স্থানীয় এতিমখানা, মাদ্রাসা ও আত্মীয় স্বজনদের দিয়েছি। বর্তমানে খাওয়ার জন্য কেউ নিচ্ছেনা। তাই কেটে কেটে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে। পৌরসভার নাটাপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক, সার কীটনাশক খরচ বেশি। ফলে উৎপাদন ব্যয়ও বেশি। বিপরীতে বাজারমূল্য যা তাতে এবার পুঁজিও উঠে আসবেনা। আমার গরু নেই, তাই মাচা থেকে গত দেড় মাস লাউ সংগ্রহ করিনা।

বাতিসা ইউনিয়নের পাটানন্দী গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, শাক সবজি বাজারে নেয়ার পরিবহণ খরচও অনেক সময় পকেট থেকে দিতে হয়। তাই বর্তমানে লাউ কুমড়া সহ অন্যান্য সবজি বাজারে না নিয়ে বাধ্য হয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জোবায়ের আহমেদ বলেন, 'গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর কৃষকদের মাঝে সরকার বেশি পরিমাণে সার ও বীজ বিতরণ করে। যার ফলে উপজেলায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। বাজারে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ বেশি থাকলে দামে প্রভাব পড়ে। তবে বাণিজ্যিকভাবে শাকসবজি আবাদের ক্ষেত্রে সময়, মৌসুম ও চাহিদা বুঝে করা উচিত। '

কুমিল্লা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রেজা শাহবাজ হাদী জানান,'সবাই একই সময় একই জাতের ফসল উৎপাদন করলে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যায়, যার ফলে দাম কমে যায়। কৃষক ও ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার্থে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সবজির ১৫ টি জাত নিয়ে চাহিদানুযায়ী উৎপাদন কর্মসূচি শুরু করছে। পর্যায়ক্রমে তা আরো বাড়বে। যাতে চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ও সরবরাহ সমান থাকে এবং বাজারে মূল্য হ্রাস বা মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষক বা ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।'

সবজি,গরু,লোকসান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত