মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে স্থানান্তর করে পশ্চিম পাশে না নেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।
রোববার (২৩ মার্চ) সকাল ১২টার দিকে সাটুরিয়া উপজেলা চত্বরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবীদ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
মুয়াজ্জেম হোসেলা তোলা মাষ্টারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মজীদ, বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন সহ আরও অনেকেই।
বক্তারা বলেন, উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন ধলেশ^রী নদী দ্বারা শাসিত। এখানকার বেশির ভাগ এলাকা চরাঞ্চল। বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে আশেপাশে কোনো বিদ্যালয় নেই। সেই আলোকে ২০১৫ সালে সর্বস্তরের জনসাধারণের কথা চিন্তা করে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেতে শুরু করে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত করা হয়। কিন্তু মো.শাজাহান মাষ্টার এবং আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল ছালাম মিলে এলাকার মানুষের সাথে কথা কাটা কাটির এক পর্যায়ে বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পূর্বপাশ থেকে পশ্চিম পাশে নেবার পাঁয়তারা করে। বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে থাকলে বরাইদ ইউনিয়নের ৫ টি ওয়ার্ডের মানুষ সহ সুবিধা পাবে শত শত শিক্ষার্থীরা। আর পশ্চিম পাশে নিয়ে গেলে মাত্র ১টি ওয়ার্ডের আংশিক লোক সুবিধা পাবে। বক্তারা আরো বলেন, কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল, নদীর পশ্চিম পাশে বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য জমি ক্রয় করে এবং নতুন একাডেমিক ভবন তৈরি করার জন্য পাঁয়তারা করছে। আজ প্রাথমিক বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক কর্মকর্তা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হবে। এরপর স্থানান্তর কাজ বন্ধ না হলে কঠিন আন্দোলন করা হবে বলে এলাকাবাসী হুঁশিয়ার করেন।
এতে সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন বলেন, বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের শিকার হলে স্থানান্তর করার বিধান রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা বরাইদ ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডের মানুষের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করতে বিদ্যালয়টিকে স্থানান্তরের পাঁয়তারা করছে।
বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি যেখানে নিতে চাচ্ছে তার নিকটেই একটি বাজার আছে। সেখানে গেলে আমাদের বখাটে দের খপ্পরে পড়তে হবে। তাছাড়া খেয়া পারা পার হতে হবে। খেয়া পারাপার হতে গেলে আমাদের ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশি সময় লাগবে। তাই আমরা চাই বিদ্যালয়টি এখানেই থাকুক।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর যাতে না হয়, এর জন্য মানিকগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে বিগত ২৩-০২-২০২৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা থাকার পরও চুক্তিটি বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে ফোন তাকে পাওয়া যায়নি।