কক্সবাজারের রামুতে চুরির অভিযোগে আল আমিন নামের এক কিশোরকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ রামু থানায় মামলাটি (নং ৪৫) দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা খতিজা বেগম।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- আবদুর রহিম চৌধুরীর ছেলে মাহমুদুল করিম রানা, এহেছানুল করিম, শিক্ষক রেজাউল করিম, এহেছানুল করিমের স্ত্রী রোকিয়া আকতার, ছেলে তাহছানুল করিম, নুরুল হকের ছেলে ছালেহ আহমদ, আবদুর রহিম চৌধুরীর ছেলে আমিনুল করিম, রেজাউল করিমের ছেলে জামিলুর রেজা শাওন এবং মনোয়ার করিমের ছেলে রায়হানুল করিম।
উল্লেখ্য গত রবিবার, ২৩ মার্চ রাতে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ধেছুয়াপালং রাবেতা এলাকায় চুরির অভিযোগে কিশোর আল আমিনকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। আল আমিন ওই এলাকার মৃত রমিজ উদ্দিনের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতনের শিকার শিশু আল আমিনকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়।
গ্রামবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, আগেরদিন রবিবার রাতে তারাবির নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ১২ বছর বয়সী আল আমিনকে তুলে নিয়ে যান ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রহিম চৌধুরীর ছেলে মাহমুদুল করিম রানা ও তার (রানা) বড় ভাই আল ফুয়াদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এহেছানুল করিম। এরপর বসত বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে চোখ বেধে শারীরিক নির্যাতন চালায় মাহমুদুল করিম রানা, এহেছানুল করিম ও তার পরিবারের আরও একাধিক সদস্য।
রামু থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ জানিয়েছেন- রবিবার রাতে আল আমিনের পরিবারের লোকজন পুলিশের পরিষেবা ৯৯৯ এ কল করে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারধরের শিকার আল আমিনকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। শিশুটির পুরো শরীরের রক্তাক্ত আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিশু নির্যাতনে অভিযুক্ত মাহমুদুল করিম রানা ও এহেছানুল করিমের ভাই আহমেদুল করিম রুবেল শিশুটিকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে জানান- তিনি নয়, তার অপর ভাইয়েরা মারধর করেছে।
তিনি আরও জানান- শিশু আল আমিন চলতি রমজান মাসে তাদের বাড়ি থেকে ছাগল, বৈদ্যুতিক পাখা, মার ধরার জাল-সহ অনেক মালামাল চুরি করেছে। রবিবার রাতে আবারও চুরি করতে গিয়ে সে হাতে নাতে ধরা পড়ে। এসময় তাকে মারধর করা হয়। তবে পরে শিশুটির মা ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে আবারও তাকে (আল আমিন) মারধর করলে সে বেশী জখমপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী জানিয়েছেন- নির্যাতনের শিকার আল আমিনের মা বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ জড়িতদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে।