ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ভ্রমণপিপাসু মানুষের উপচে পড়া ভিড় জমেছে। সবুজ বোরো ধানের মাঠ, এঁকেবেঁকে চলা অলওয়েদার সড়ক, নদ-নদীর রূপ আর নির্মল প্রকৃতি উপভোগে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন হাওর এলাকায় ছুটে আসছেন হাজারো দর্শনার্থী।
বর্ষার সময় যখন হাওর ভরে ওঠে জলরাশিতে, তখন নৌকাভ্রমণেই মেতে থাকেন পর্যটকেরা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। এখন হাওরের বুকজুড়ে শুধু সবুজের সমারোহ। চারপাশে ধানক্ষেত, তার মাঝ দিয়ে ছুটে চলা ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়কই হয়ে উঠেছে পর্যটনের মূল আকর্ষণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার নিকলী, বালিখলা, মিঠামইনের জিরোপয়েন্ট, ব্রিজ ও সড়কের আশপাশে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কেউ ঘোড়ার পিঠে, কেউ বাইকে, আবার কেউ দল বেঁধে পিকআপে গান-বাজনার সাথে নেচে বেড়াচ্ছেন। তরুণ-তরুণীরা টিকটক ও সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের মজার মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে ব্যস্ত। ফটোগ্রাফাররাও সুযোগ নিচ্ছেন ঈদ আনন্দের। দর্শনার্থীদের ছবি তুলে করছেন আয়।
জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা হাওর সবচেয়ে কাছের হওয়ায় এখানেও প্রতিদিন উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কেউ নদীপথে নৌকা বা স্পিডবোটে ঘুরছেন, কেউবা বালিখলা ঘাট থেকে সাবমার্চেবল সড়ক ধরে যানবাহনে করে মিঠামইন জিরোপয়েন্টে যাচ্ছেন। সেখানে ফটোসেশন, আড্ডা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে কাটাচ্ছেন আনন্দঘন সময়।
ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন বহু পর্যটক। রাজধানী থেকে আসা ভ্রমণপ্রেমী চৈতি খন্দকার বলেন, "আগে শুধু বর্ষার হাওরের কথা শুনেছিলাম। কিন্তু এখন এসে দেখি শুষ্ক মৌসুমেও এতো সৌন্দর্য! এখানকার সড়ক আর প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।"
স্থানীয়রা জানান, সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন-কার্তিক পর্যন্ত হাওরে পানি থাকে, তখন ভ্রমণ হয় নৌকাভিত্তিক। এবার ব্যতিক্রম হয়েছে, শুষ্ক মৌসুমেও পর্যটকেরা হাওরের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে ভিড় জমাচ্ছেন।
তবে স্থানীয়দের একটাই দুশ্চিন্তা—তরুণদের অসাবধান বাইক চালানো। এ ছাড়া নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
আবা/সজল