বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, "মুক্তিযুদ্ধকে যারা অস্বীকার করে তারা ভালো মানুষ নয়। আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধকে না মানেন, আমি আপনাকে রাজাকার বলব, মুক্তিযুদ্ধকে না মানলে আমি বলব আপনার পূর্বপুরুষ আলবদর ও দালাল ছিল। এ জন্য আপনারা আমাকে যত গালাগালিই করেন না কেন, আমি মুক্তিযুদ্ধকে ছাড়তে পারব না। কারণ আমরা লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছি।"
শনিবার (৫ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম সদরের অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ফজলুর রহমান বলেন, "আওয়ামী লীগ গেছে, তারা মাঠে নেই। এখন বিএনপি হলো দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল। এখন নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ সিট পাবে। ফসলের জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করেছে বিএনপি, বীজ লাগাইছি আমরা, নিড়ানি দিছি আমরা, রোগ-বালাই দমন করেছি আমরা। এখন ধান কি অন্যের ঘরে যাবে? তা হতে পারে না। রক্তে বুনা এই ধান পাওয়ার ন্যায্য অধিকার শুধু বিএনপিরই আছে।"
তিনি বলেন, "বিএনপি ক্ষমতার জন্য পাগল নয়, ক্ষমতাটা বিএনপির প্রাপ্য। জনগণ হচ্ছে দেশের মালিক। ইউনূস সাহেবরা হলেন পাহারাদার। কাজেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। দেশের মালিকদের ঠিক করতে দিন দেশের পাহারাদার কে হবে, কোন দলে হবে।"
দেশে চলমান বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে, অন্যায়ভাবে জেলে দিয়েছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগের মতো চলতে চাই না। আমরা চাই, দেশের আইন সঠিকভাবে চলুক। আমি বলি, আওয়ামী লীগের নির্দোষ লোকদের নির্যাতন করা যাবে না। তাদের ওপর অন্যায় আচরণ করা যাবে না।"
বিএনপির এই নেতা বলেন, "৫ আগস্টের পর আমরা অনেক অন্যায় হতে দেখছি। মাজার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সংস্কৃতি ও গান-বাজনায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের মনের খোরাক। এগুলোকে রক্ষা করতে হবে।"
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে ফজলুর রহমান বলেন, "মুক্তিযুদ্ধকে মাইনা আপনি পাল্লা (দাঁড়িপাল্লা) মার্কায় ভোট চান, ডালিম মার্কায় ভোট চান, ইসলামের কথা বলে ভোট চান, হেফাজতে ইসলামের কথা বলে ভোট চান, আহলে হাদিসের নামে ভোট চান। আমার আপত্তি নেই। মানুষ যদি আপনাদের ভোট দেয়, ইসলামের কথা শুনে যদি ভোট দেয় আপনি দেশ চালান। আপনাকে আমি স্যালুট করব।"
তিনি আরো বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে হাসিনার কোনো সম্পর্ক নেই। হাসিনা আর মুক্তিযুদ্ধ এক নয়। এখন হাসিনা ফেল করেছে। তাই বলে তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ তো ফেল করেনি। একটা জাতির মুক্তিযুদ্ধ কখনো ফেল করে না। যারা এসব বলছে তারা মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করতে চায়, ছোট করতে চায়। আমরা হাসিনা সরকারকে বিদায় করেছি নতুন আরেকটি সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর জন্য। কাজেই দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। অনির্বাচিতদের হাতে বেশিদিন দেশ থাকতে পারে না। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মালিকদের পছন্দের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের প্রধান চাওয়া।"
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হেসেন মুকুল, অষ্টগ্রাম সদর বিএনপির সভাপতি সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু, সাধারণ সম্পাদক মো. দানাসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।