গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে পটুয়াখালীর দুমকিতে সরকারি জনতা কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সরকারি জনতা কলেজের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দুমকি নতুন বাজার গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘হামাসের যোদ্ধারা, লও লও লও সালাম’, ‘ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে সরকারি জনতা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ হোসেন আরাফাতের সভাপতিত্বে ও দুমকি উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাৎ হোসেন,উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন শরীফ,মিজানুর রহমান,সাদ্দাম হোসেন,ওবায়দুল ইসলাম ও কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম সাঈদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন,রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে সরকারি জনতা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ হোসেন আরাফাত বলেন, আমরা ইসরায়েলের পণ্য বয়কট করবো, ক্রয় এবং খাওয়া ও ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকব, কিন্তু আমরা কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর লুটপাট করবো না, ইসলাম এগুলো সমর্থন করে না। গতকাল সিলেট,ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় যারা হামলা ভাঙচুর লুটপাট করেছে তারা দেশের শত্রু, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্রদল দেশের সকল ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন 'ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর যুগের পর যুগ ধরে যে বর্বর নির্যাতন, নিপীড়ন চলছে সেই জায়গায় বিশ্ব মানবতা আজ নীরব। পৃথিবীর বুকে বড় ইসলামিক রাষ্ট্র আছে কিন্তু তারা কোনো কথা বলছে না। এটা কোনো ধর্মযুদ্ধ না, এটা আসলে মানবতার যুদ্ধ। পৃথিবীর সকল মানুষের উচিত ফিলিস্তিনিদের পাশে এসে দাঁড়ানো।
যেভাবে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, এভাবে যদি চলতে থাকে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই পৃথিবীতে যে ফিলিস্তিন নামক একটি দেশ ছিল, গাজা নামের একটি উপত্যকা ছিল সেটা পৃথিবীর মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যে হামলা চালাচ্ছে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে আমরা বিশ্ব বিবেক ও আন্তর্জাতিক যে সংস্থাগুলো আছে তাদেরকে অনুরোধ করবো যে, আপনারা অতি দ্রুত গাজাবাসীর পাশে দাড়ান এবং গাজায় যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে সেটি বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
ফিলিস্তিনের গাজার প্রত্যেকটি শিশুর কান্না আমাদেরকে কাঁদিয়ে যাচ্ছে, ফিলিস্তিনের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাই ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবিতে আমরা সকলে এখানে সমবেত হয়েছি। শুধু ইসরায়েল বিরোধী স্লোগান দিয়ে, জায়ানবাদ বিরোধী স্লোগান দিয়ে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের মুক্ত করা যাবে না। ইসরায়েল হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শিশু রাষ্ট্র। সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পতন না হলে ইসরায়েলের পতন সম্ভব না। ফিলিস্তিনের মুসলমানদের মুক্তির জন্য আমরা প্রয়োজনে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
যারা মানবাধিকার নিয়ে চিৎকার করে, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, মুসলমান কিংবা ভিন্ন ধর্মের একজন মানুষের রক্ত যদি আপনাদের হৃদয় স্পর্শ করতে না পারে তাহলে আপনারা মানবাধিকারের কর্মী নন। আপনাদের এই কাজটি হচ্ছে পৃথিবী শাসন করার একটি কৌশল। গাজায় যে গণহত্যা চলছে সেটা কোনো রাজনীতি কিংবা অর্থনীতিকে সমর্থন করে না। যারা গণতন্ত্রের নামে সারা বিশ্বে পুঁজিবাদ কায়েম করে শাসন করতে চায় তাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই, গাজার এই রক্ত আপনাদের সকল প্রয়াসের বিরুদ্ধে যায়, আপনারা সবাই স্ববিরোধ মুক্ত হন, মানুষ হন তারপর পৃথিবী শাসন করেন।