ঢাকা সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনায় অংশ নেয় ৭ জন

চট্টগ্রামে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনায় অংশ নেয় ৭ জন

চট্টগ্রামের চকবাজার এক্সেস রোডের জোড়া খুনের ঘটনায় তিন মোটরসাইকেলে অংশ নিয়েছিল সাতজন। খুনের ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছিল সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের প্রধান সহযোগী মো. হাছান ও মোবারক হোসেন ইমন। ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত হাছানের নেতৃত্বে বায়েজিদ ওয়াজেদিয়া এলাকায় বৈঠক হয়।

এর আগে তারা অক্সিজেন এলাকায় ইফতার করে। বাকলিয়া থানা পুলিশ জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত রবিবার দিবাগত রাতে নগরীর সদরঘাট এলাকা থেকে সজীব নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। সজীব হত্যায় নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গত সোমবার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানিয়েছে, ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে সাজ্জাদ ওরফে ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সরওয়ার হোসেন বাবলাকে দায়ী করা হয়। মূলত ভারতে থাকা আট হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ খানের পরামর্শে সরওয়ারকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সজীবের পূর্ব পরিচিত মোবারক হোসেন ইমন প্রথমে তাকে এই পরিকল্পনার কথা জানায়। ঘটনার দিন সকালে ইমনের ফোনে সন্ধ্যায় নগরীর অক্সিজেন মোড়ে যায়। পরবর্তীতে ওয়াজেদিয়া এলাকায় যায়। সেখানে সজিব দেখে, হাছানসহ সাত-আটজন উপস্থিত আছে। সেখানেই সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দীর্ঘ বৈঠকে তারা সাজ্জাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত সরওয়ার হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ার পেছনে সরওয়ারের হাত রয়েছে- এ ধারণা থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত ১২টার পর তারা কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় যায়। হত্যাকাণ্ডের সময় তারই চালানো মোটরসাইকেলের পেছনে অস্ত্র হাতে বসেছিল মূল পরিকল্পনাকারী হাছান। তিনটি মোটরসাইকেলে সাতজন অস্ত্রধারী এ ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানায়, সরওয়ারকে বহনকারী প্রাইভেটকার থামার সাথে সাথে সরওয়ার তার পিস্তল থেকে গুলি ছোড়ে। পরে বেলাল ও হাছান গুলি ছোড়ে। ঘটনায় জড়িত সাতজনের মধ্যে একজন মুখোশ পরিহিত ছিল। তবে ইমন ছাড়া অন্যদের সে চেনে না বলে দাবি করে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জোড়া খুনের ঘটনায় তিনটি পিস্তল ও একটি শর্টগান ব্যবহার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাইন এমএম এবং সরওয়ার বাবলাকে বহনকারী প্রাইভেটকার থেকে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তলের গুলির খোসা উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীদের লক্ষ্য করে সরওয়ারও গুলি করে।

জানতে চাইলে সরওয়ার হোসেন বাবলা জানায়, তার কাছে কোন অস্ত্র ছিল না। প্রাইভেটকারে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তলের গুলির খোসা পাওয়া প্রসঙ্গে সে বলে, ওরা এলোপাতাড়ি গুলি করেছে। হয়ত তাদের ছোড়া গুলির খোসা গাড়ির ভেতরে পড়েছে।

তবে অভিজ্ঞ একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত যিনি গুলি ছোড়েন তার কাছেই গুলির খোসা পড়ে থাকে। যদি প্রাইভেটকারের ভেতরে গুলির খোসা পাওয়া যায় তাহলে কারের ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। তবে খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার হলেও ঘটনার আটদিনেও কোন অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। খুনের ঘটনায় গত ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় সাতজনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে একটি মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম।

মামলার আসামিরা হলো- সাজ্জাদ প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ, সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না, মো. হাছান, মোবারক হোসেন ইমন, রায়হান ও বোরহান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাকলিয়া থানা পুলিশ এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলো- মোহাম্মদ বেলাল, মো. মানিক, সাজ্জাদ হোসেন, মো. সজীব ও এহতেশাম রাফাত নীরব। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

জোড়া,খুন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত