ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মেহেরপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

মেহেরপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

মেহেরপুরে স্ত্রী রওশনারা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী তসীম উদ্দীনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার বিকালের দিকে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত তসীম উদ্দিন মেহেরপুর সদর উপজেলার চাঁদ বিল গ্রামের দেলু শেখের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে তসীমউদ্দিন তার স্ত্রী রওশনারা খাতুনকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে পেঁছিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখে এবং আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। পরদিন সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়না তদন্ত জন্য মর্গে প্রেরণ করে। ওই ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানায় একটি ইউ ডি মামলা করা হয়। যার মামলা নং ১১। পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা রিপোর্ট দেন।

এদিকে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর তসিম উদ্দিন শেখ এর ছেলে রাজন তার পিতার দায়ের করা এজাহার বাতিল করে ৮/৬/২০১৭ তারিখে একটি এজাহার দাখিল করেন। ছেলের দায়ের করা এজাহারে জানানো হয়, তার মা শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় প্রতিদিন ওষুধ সেবন করতেন। ঘটনার দিন ওষুধ খেতে রাজি না হওয়ায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রাজনের মা অর্থাৎ তসিমের স্ত্রী রওশনারা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন। পরে তার গলায় ওড়না পেঁছিয়ে পাশের ঘরে আড়ার সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে রাখেন। আত্মহত্যার মামলাটি পরে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যার মামলা নং ১২। সেশন মামলা নং ২৮২/২০১৯। পরে তদন্তকারী অফিসার মেহেরপুর সদর থানার তৎকালীন এসআই খন্দকার রবিউল ইসলাম প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। পরে তার বদলির কারণে সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্বে দেওয়া হয়। ওই সময় নিহত রচনা তার স্বামী জসীমউদ্দীনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তিনি ১৬৪ ধারায় হত্যার দায়িত্ব স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি তসীম উদ্দীন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে দন্ডবিধি ৩০২ ধারা মতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। মামলায় দন্ডবিধির ২০১ ধারায় আরো ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড। এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায় আরো ২ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিডিউসার সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামীর পক্ষে আসাদুল আজম খোকন কৌশলী ছিলেন।

মেহেরপুর,কারাদণ্ড,স্ত্রী হত্যা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত