কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এবার ৪ মাস ১২ দিনে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমান স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা। দানের এইসব অর্থ মসজিদের স্থানে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোসহ জেলার দরিদ্র-অসহায় রুগীদের চিকিৎসাকাজে ব্যায় হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মসজিদের লোহার দানসিন্ধুক খুলতেই দেখা যায় শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ওই মসজিদেরই দোতলায়। পরে, আইনশৃঙ্খলা বাহীনির কড়া নিরাপত্তায় মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন প্রায় আড়াই'শ মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক ও ৭০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিন থেকে চারমাস পরপরই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে।
এবার ৪ মাস ১২ দিন পর শনিবার সকালে মসজিদের ১১ টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় ২৮ বস্তা টাকা। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালংকার।
এর আগে, গেলো বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদের দান বাক্সে ৩ মাস ১৩ দিনে পাওয়া গিয়েছিলো ২৯ বস্তা টাকা। দিন শেষে গণনা করে যার পরিমান দাঁড়িয়েছিলো রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালংকার।
এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়া সহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু, ছাগল, হাস, মুরগীসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।
ইতিমধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদের আয় দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই
পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।