পহেলা বৈশাখের পরদিন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভূমি অফিসে দেখা গেল এক ব্যতিক্রমী চিত্র। খাজনা আদায়ের কাজে সাধারণত অনাগ্রহী জমির মালিকরা এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে খাজনা দিচ্ছেন। আর জমির খাজনা দেওয়ার পর অতিথির মতো আপ্যায়ন—মিষ্টি, মোয়া, মুড়ি পরিবেশন।
“শুভ হালখাতা” ব্যানারে সেজেছে ভূমি অফিস চত্বর। আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করতে আনা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী গরু ও ঘোড়ার গাড়ি। সকালে ফিতা কেটে এই ব্যতিক্রমধর্মী হালখাতার উদ্বোধন করেন নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ। এদিন উপজেলার ১৫টি ভূমি অফিসে একযোগে দিনব্যাপী হালখাতা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এমন আয়োজনে খুশি জমির মালিকরা। নাগেশ্বরী পৌরসভার সোহরাব আলী বলেন, “আগে খাজনা দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতাম। এখন দালাল ছাড়াই সরাসরি খাজনা দিলাম। খাওয়ানোও হলো!” তিনি জানান, ২ একর ৮৭ শতাংশ জমির তিন বছরের খাজনা ৬ হাজার ২২১ টাকা পরিশোধ করেছেন।
সন্তোষপুর ইউনিয়নের গাগলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, “এমন সহজে খাজনা দেওয়ার সুযোগ আর এমন আপ্যায়ন আগে পাইনি। আশা করি প্রতি বছর এ ধারা অব্যাহত থাকবে।”
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান বলেন, “বাংলা বছরের শুরুতে হালখাতা করে খাজনা আদায়ের ঐতিহ্য ছিল। সেটিকেই ফিরিয়ে আনতেই এই আয়োজন। এতে জমির মালিকদের উৎসাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, “অনেক সাড়া পাচ্ছি। আগামী বছরগুলোতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।”