রংপুর অঞ্চলে দেড় বছর আগে গ্যাস সংযোগ উদ্বোধন করা হলেও এখনো পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়নি। ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকায় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া ‘বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন শেষ হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে। ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল), আর বিতরণ অংশের দায়িত্বে রয়েছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিএল)।
২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর পেট্রোবাংলার তৎকালীন চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকারের মাধ্যমে রংপুরের পীরগঞ্জের নিয়ামতপুর চৌরাহাট এলাকায় গ্যাস সংযোগ উদ্বোধন করা হয়। জানানো হয়, পাইপলাইনের মাধ্যমে শিল্পখাত ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস সরবরাহ করা হবে, যা প্রথমে সৈয়দপুর ইপিজেড এবং পরবর্তীতে রংপুরে সম্প্রসারিত হবে। তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও বাস্তবায়নে অগ্রগতি নেই।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আকবর আলী বলেন, “গ্যাস সংযোগ পেলে রংপুরে নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন সম্ভব হতো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। এখন শুধু প্রতিশ্রুতি শুনছি, বাস্তবায়ন কিছুই হচ্ছে না।”
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক সাব্বির আহমেদ বলেন, “বিসিক শিল্প নগরীসহ বহু উদ্যোক্তা অপেক্ষায় রয়েছেন। গ্যাসের অভাবে শিল্পের সম্ভাবনাগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে।”
তরুণ উদ্যোক্তা সুলতান আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গ্যাস সরবরাহের উদ্বোধন ছিল নিছক নাটক। রংপুরবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।”
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর রংপুর মহানগর সভাপতি ফখরুল আনাম বলেন, “গ্যাস সংযোগ বাস্তবায়ন হলে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এটি এখন সময়ের দাবি।”
এদিকে, প্রকল্প পরিচালক ও পিজিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী ফজলুল করিম জানান, “চলতি বছরের জুনের মধ্যে গ্যাস বিতরণ লাইনের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে রংপুর নগরীর পাগলাপীর থেকে সলেয়াশাহ পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।”